সৌভিক মুখার্জী, কলকাতাঃ গরীব থেকে মধ্যবিত্ত, এখন TV নেই এমন ঘর সেরকম দেখা যায় না। তবে আপনি কি কোনদিন কল্পনা করেছেন, যে আপনাকে টিভি কেনার জন্য সরকারের কাছে অনুমতি নিতে হবে? হ্যাঁ একদম ঠিকই শুনেছেন। কারণ পৃথিবীতে এমন একটি দেশ রয়েছে, যেখানে টিভি কেনার জন্য সরকারের কাছে অনুমতি নিতে হয়। এমন কি শুধু অনুমতি নয়, টিভি কেনার পরও আপনার উপর কঠোর নজরদারি চালানো হবে। ভাবতেও অবাক লাগছে তাইনা? কিন্তু এই অদ্ভুত নিয়ম সত্যিই পৃথিবীর একটি দেশে বিদ্যমান।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
এই দেশে নাগরিকদের জীবনযাপন এতটাই নিয়ন্ত্রণ ভাবে চালানো হয়, যাতে তাদের বিনোদন কীভাবে উপভোগ করা উচিত সেটাও ঠিক করে দেয় সরকার। আপনি যদি কোনদিন একটা টিভি কিনতে চান, তাহলে সরকারি কর্মকর্তারা আপনার বাড়িতে উপস্থিত হবেন এবং তারা নিশ্চিত করবেন যে, আপনি শুধুমাত্র সরকারের অনুমোদিত অনুষ্ঠানই দেখতে পারবেন। হ্যাঁ এমনটাই এই দেশের নিয়মকানুন।
কোন দেশের কথা বলছি আমরা?
এই দেশের নিয়ম এতটাই কঠোর যে, নাগরিকদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বলতেও তেমন কিছু নেই। সবই চলে সরকারের মর্জি মত। এমনকি ছোটখাটো বিষয়েও রয়েছে কঠোর বিধি নিষেধ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এই দেশের মানুষের চুল কাটার স্টাইল পর্যন্ত নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এই দেশে বিশেষ এক ধরনের হেয়ারকাট রাখা বাধ্যতামূলক। যদি কেউ এই অনুমোদিত স্টাইলের বাইরে চুল কাটেন তাহলে তাকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি পড়তে হয়।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
এবার নিশ্চয়ই কৌতূহলে পড়ে গেছেন, যে আমরা কোন দেশের কথা বলছি? যেখানে টিভি কেনা পর্যন্ত কঠোর নিয়মের মধ্যে পড়ে! আসলে এটি আর কোন দেশ নয়। এটি হলো উত্তর কোরিয়া।
টিমোথি চোয়ের অভিজ্ঞতা
সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার বাসিন্দা টিমোথি চো, যিনি বহু কষ্টে দেশ ছেড়ে পালাতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি এই দেশে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তিনি বলেছেন, “আপনি যদি উত্তর কোরিয়ায় টিভি কিনতে চান, তাহলে প্রথমেই সরকারি কর্মকর্তারা এসে আপনার বাড়ির সব অ্যান্টেনা খুলে ফেলবেন। যাতে বাইরের কোন সম্প্রচার আপনি না দেখতে পারেন।”
টিভি দেখাতেও কড়া নিষেধাক্কা
আমাদের দেশে কিংবা বিশ্বের যেকোন দেশে আমরা টিভিতে বিভিন্ন চ্যানেল দেখে থাকি। যেমন খবর, সিনেমা, সিরিজ, স্পোর্টস, আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি। কিন্তু উত্তর কোরিয়ায় তা সম্ভব নয়। যেখানে শুধুমাত্র একটি বিষয় টিভিতে সম্প্রচারিত হয়। তা হল কিম পরিবারের প্রশংসাসূচক অনুষ্ঠান। এছাড়া আর কোনো অনুষ্ঠান আপনি টিভিতে দেখতে পারবেন না। ২৪ ঘন্টা ধরে শুধু একটা বিষয়েই প্রচার করা হয়, যাতে দেশের জনগণ সরকারের বাইরে কিছু জানতে না পারে।
বিরক্ত সাধারণ মানুষ
এই ধরনের কঠোর শাসনের কারণে বহু মানুষ এই বিরক্তিকর দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সেটাও এখানে সম্ভব নয়। কারণ সীমান্ত পার হওয়া মানেই মৃত্যুর ঝুঁকি। তবুও কিছু মানুষ জীবনের ঝুঁকে নিয়ে পালিয়েছে। ঠিক তেমনি টিমোথি চো পালিয়ে এসে এই শাসনের আসল চিত্র তুলে ধরেছেন। সত্যিই কি এমন একটি দেশে এই কষ্টকর জীবনযাপন করা সম্ভব? আপনাদের কী মনে হয়?