সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটলো এক সিনেমার দৃশ্য। শিক্ষা দুনিয়ায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের খবর যখন রাজ্যজুড়ে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে, তখন তার মধ্যেই সামনে আসলো এক ফিল্মি কাণ্ড। আসলে এ এক চাঞ্চল্যকর প্রেম কাহিনী। তাও স্কুল শিক্ষক ও শিক্ষিকার। ওই স্কুলে শিক্ষকতা করতেন এক শিক্ষক ও শিক্ষিকা। তাদের সম্পর্ক নিয়ে আগে থেকেই চলছিল কানাঘুষো। আর শেষমেষ তারা দুজনেই চাকরি ছেড়ে একসঙ্গে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছেন।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
কোথায় ঘটল এই ঘটনা?
ঘটনাটি দাসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গোপালপুর গ্রামের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। শিক্ষিকার বয়স ৪০-র বেশি। তার এক কলেজ পড়ুয়া ছেলেও রয়েছে। সূত্র বলছে, তিনি ২০০৬ সালে চাকরি পেয়েছেন। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক শিক্ষিকার থেকে অনেকটাই ছোট। ২০০৭ সালে তিনি শিক্ষক নিয়োগে চাকরি পান। ঘাটাল শহরের কুশপাতা ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে তার বাড়ি, এমনটাই খবর। তারও এক সাত বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী বর্তমানে অসুস্থতার কারণে মেদিনীপুর শহরে বাপের বাড়িতে থাকছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, ২০২২ সালে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের মাধ্যমে ওই শিক্ষক গোপালপুর স্কুলে যোগ দেন। আর এরপর থেকেই স্কুল চত্বরে ওই শিক্ষক ও শিক্ষিকার ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে।
অফিস রুমে ঘন্টার পর ঘন্টা একান্ত সময়!
স্থানীয়দের অভিযোগ, ইস্কুলের টিআইসি অনুপস্থিত থাকলে ওই শিক্ষক এবং শিক্ষিকা গোপনে প্রেম সারতেন। তাও অফিস রুমে একসঙ্গে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটিয়ে। গ্রামের মানুষ এই বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বিরক্তি প্রকাশ করেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষও এই বিষয়ে নীরব ছিল না। তারা একাধিকবার তাদেরকে সতর্ক করেছিল। তবুও অভ্যন্তরীণ নিয়ম লঙ্ঘন করে তারা সম্পর্ক চালিয়ে যান।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
২৬শে মার্চের পর থেকেই নিখোঁজ
স্কুলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ২৮শে মার্চ থেকে ওই দুই শিক্ষক এবং শিক্ষিকা আর স্কুলে আসেনি। এমনকি কোন ছুটির আবেদনও জমা দেননি তারা। এরপরে সামনে আসে আসল ঘটনা। ২৭শে মার্চ বিদ্যালয়ে পরিদর্শক সৈকত মন্ডলের অফিসে গিয়ে তারা নাকি নিজের ইচ্ছায় চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। আর এই বিষয়টি চূড়ান্ত বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্কুল শিক্ষা আধিকারিকের দপ্তরে।
পুলিশের দ্বারস্থ পরিবার
যখন তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন ঘাটাল থানায় শিক্ষক এবং শিক্ষিকার পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে নিরুদ্দেশের ডায়েরি করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আর সেই টানেই তারা একসঙ্গে পালিয়েছে।
আর এই ঘটনার মাধ্যমে আবারো উঠে আসলে ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং পেশাগত দায়িত্বের টানাপোড়েন। আজকের দিনে যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণী চাকরির জন্য লড়াই করে যাচ্ছে, তখন একটি সরকারি চাকরিকে এভাবে বিসর্জন দেওয়া সত্যিই বিরল, তা বলা বাহুল্য।