সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারত এবং বাংলাদেশের (India and Bangladesh) মধ্যে বাণিজ্যের সম্পর্ক বরাবরই অন্তরঙ্গ। কিন্তু সাম্প্রতিক এক সিদ্ধান্ত সেই সম্পর্ককে আদায় কাঁচকলার মধ্যে ফেলেছে। হ্যাঁ, ভারত থেকে স্থলপথে সুতো আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। আর এই সিদ্ধান্ত শুধু দুই দেশের বাণিজ্যের উপর প্রভাব ফেলেনি, বরং বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পেও বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করছে উপর মহলের লোকজন।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ?
সম্প্রতি বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সেখানে জানানো হয়েছে, এখন থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারি এই পাঁচটি স্থলবন্দর দিয়ে তারা আর ভারত থেকে সুতো আমদানি করবে না। তবে বিষয়টি এখানে শেষ নয়। সমুদ্র পথ বা অন্য যেকোন মাধ্যম দিয়ে ভারত থেকে সুতো আমদানির ক্ষেত্রে কোন রকম নিষেধাক্কা নেই। অর্থাৎ, নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র স্থলবন্দর ভিত্তিক আমদানির উপরেই।
কেন এরকম সিদ্ধান্ত?
আসলে এই পদক্ষেপের পিছনে রয়েছে বাংলাদেশের দেশীয় বস্ত্র শিল্প রক্ষা করার টার্গেট। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে ভারত থেকে আসা সস্তা সুতোর নির্ভরতা দিনের পর দিন বাড়ছিল। বিশেষ করে কলকাতা হয়ে স্থলপথে ঢোকা সুতোর দাম তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় দেশীয় সুতো শিল্প ভরাডুবির মধ্যে পড়েছিল।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
এই নিয়ে একাধিক বস্ত্রশিল্প সংগঠন দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ জানাচ্ছিল। অবশেষে বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ কমিশন এবং শিল্প সংগঠনের আবেদনের ভিত্তিতে এবার এই বড়সড় সিদ্ধান্তের পথে হাঁটা হলো।
ভারতের সিদ্ধান্তের পাল্টা জবাব?
কিছুদিন আগেই ভারত বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ায় ইতি টানে। অর্থাৎ, ভারতীয় শুল্কবন্দর ব্যবহার করে আর কোন তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহন করতে পারবে না ইউনূসের দেশ। ভারত সরকারের দাবি ছিল, ভারতের রপ্তানিকারক সংস্থাগুলি দিনকে দিন সমস্যায় পড়ছিল। আর এই কারণে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর ভারতের এই সিদ্ধান্তের কিছুদিন পরেই বাংলাদেশ ভারতকে পাল্টা বুড়ো আঙুল দেখাল।
সুতোর বাজারে কীরকম প্রভাব পড়বে?
বাংলাদেশ মূলত ভারত, চীন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান ইত্যাদি দেশ থেকে সুতো আমদানি করে। কিন্তু ভারতীয় সুতো সস্তা ও সহজলভ্য হওয়ার কারণে বাংলাদেশ গার্মেন্টস কারখানাগুলিতে বেশি ব্যবহার করা হতো। তবে স্থলপথ বন্ধ হওয়ায় এখন ভারতীয় সুতো আমদানি করতে সমুদ্রপথের উপরে নির্ভর করতে হবে, যা খরচ এবং সময়, দুইই বাড়িয়ে দেবে।