শুভ্রোদীপ চক্রবর্তী, কলকাতা: সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে একটি পোস্ট। যেখানে দাবি করা হয়েছে, এয়ারপড বা ব্লুটুথ ইয়ারবাড (AirPods Earbuds) মাইক্রোওভানের সমান বিকিরণ নির্গত করে। বাস্তবে এই দাবি সম্পূর্ণ ভুল। কারণ ব্লুটুথ ডিভাইসগুলি নন-আয়নাইজিং ইএমএফ বিকিরণ নির্গত করে, যা মানুষের মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর নয়। আজকাল ব্লুটুথ ওয়্যারলেস ইয়ারবাড ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তারযুক্ত ইয়ারবাডের তুলনায় এগুলির শব্দের গুণমান উন্নত এবং বর্তমান গতিশীলতার তাল মিলিয়ে চলতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি কিছু ব্যবহারকারী ভিডিয়ো তৈরি করে দাবি করছে যে, ইয়ারবাডগুলি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফ্রিকোয়েন্সি নির্গত করে এবং, মাইক্রোওয়েভ ওভেনও একই ফ্রিকোয়েন্সি নির্গত করে। এই বিকিরণগুলি মানুষের মস্তিষ্কের জন্য খুবই বিপজ্জনক। পাশাপাশি, এই পোস্টগুলিতে ব্যবহারকারীদের ইয়ারবাড বর্জন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
🛜 WIRELESS ALERT: AirPods contain almost the same amount of radiation as a microwave oven.
“None of us would walk around with a microwave strapped to our heads, right? So why would we walk around with one inside of our ears?” pic.twitter.com/4lbOnuKjOG
— Children’s Health Defense (@ChildrensHD) February 25, 2025
তবে এই দাবি সম্পূর্ণ ভুল। ইয়ারবাড থেকে যে বিকিরণ নির্গত হয় তা EMF বিকিরণ, যা মাইক্রোওয়েভ ওভেনের বিকিরণ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
যে ইয়ারবাডগুলি ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে, সেগুলি ২.৪ গিগাহার্টজ ISM স্পেকট্রাম ব্যান্ডে (২৪০০ থেকে ২৪৮৩.৫ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে) কাজ করে। এই প্রযুক্তি ইয়ারবাড এবং আপনার ডিভাইসের (ফোন, ট্যাবলেট, ইত্যাদি) মধ্যে তারবিহীন যোগাযোগ তৈরি করে। যদিও এই প্রযুক্তিটি বিশেষজ্ঞদের কাছে নিরাপদ বলে মনে করা হয়। এটিও রেডিওফ্রিকোয়েন্সি বিকিরণ নির্গত করে। ব্লুটুথ ডিভাইস দ্বারা নির্গত রেডিওফ্রিকোয়েন্সি বিকিরণের পরিমাণ পরিবর্তিত হতে থাকে। সমস্ত ডিভাইস একই পরিমাণে বিকিরণ নির্গত করে না।
বিশ্বে ৯০% জনসংখ্যা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। যার মানে বিশ্বজুড়ে প্রচুর বিদ্যুৎ এবং ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয়। তবে, ওয়্যারলেস ইয়ারবাড কি ক্যান্সারের কারণ? ব্লুটুথ ডিভাইস থেকে নির্গত বিকিরণের ধরনের মতো নন-আয়নাইজিং রেডিয়েশনের নিম্ন-স্তরের সংস্পর্শে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি এখনও স্পষ্ট নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং আন্তর্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা সংস্থা (IARC) রেডিওফ্রিকোয়েন্সি বিকিরণকে “সম্ভাব্য কার্সিনোজেন” হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে, যার অর্থ মানুষের ক্যান্সারের সাথে এর সংযোগের সীমিত প্রমাণ রয়েছে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলি বোঝার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।