প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হিন্দু শাস্ত্রে মহাদেবের আরাধনার মাহাত্ম্যের কথা বহুলভাবে প্রচলিত। গ্রাম বাংলায় ষষ্ঠী তিথিতে দেবী ষষ্ঠীর আরাধনা করার প্রথা অনেক আগে থেকেই ছিল। অশোক ষষ্ঠী এবং শীতল ষষ্ঠী হল এমনই ষষ্ঠী পার্বণ। তবে নীলষষ্ঠীতে ষষ্ঠী দেবী নন, সন্তানের মঙ্গল কামনা করা হয়ে থাকে মহাদেবের আরাধনার মাধ্যমে। এই পূজা বা ব্রত মহিলারা তাঁদের সন্তানের মঙ্গলকামনায় পালন করে থাকেন। প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তির চড়কের আগের দিন নীলষষ্ঠীর ব্রত পালন করা হয়। অনেকে আবার এদিন দেবাদিদেব মহাদেব এবং মাতা পার্বতী দুজনের একই সঙ্গে আরাধনা করে থাকেন। একনজরে জেনে নেওয়া যাক চলতি বছর কবে নীল ষষ্ঠী পালন করা হতে চলেছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
কবে নীলষষ্ঠী? | Nil Sasthi 2025 |
প্রতি বছর নীলষষ্ঠীর (Nil Sasthi 2025) পরের দিন পালিত হয় চৈত্র সংক্রান্তি। আর তার পরের দিন পয়লা বৈশাখ। পুরাণ অনুসারে জানা যায় নীলষষ্ঠীর এই বিশেষ দিনেই মহাদেবের সঙ্গে নীল চণ্ডিকা বা নীলাবতীর বিয়ে হয়েছিল। তাই এই দিনটি নীলষষ্ঠী নামে পরিচিত। অনেকে এই পুজোকে নীল পুজো বলা হয়ে থাকে। শাস্ত্র মতে চলতি বছর আগামী ১৩ এপ্রিল, বাংলায় ৩০ চৈত্র ১৪৩১ রবিবার নীল পুজো পালন হতে চলেছে। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে আগামী ১৩ এপ্রিল রবিবার প্রতিপদ তিথি শুরু সকাল ৫টা ৫২ মিনিট থেকে। এবং অমৃতযোগ শুরু হবে সকাল ৬টা ১৩ মিনিট থেকে ৯টা ৩২ মিনিট, এবং পুনরায় সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিট থেকে ৮টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত।
নীলষষ্ঠীর উপবাস
এছাড়াও মাহেন্দ্রযোগ রয়েছে সকাল ৬টা ১২ মিনিট পর্যন্ত, পুনরায় বেলা ১২টা ৫৩ মিনিট থেকে ১টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত, পুনরায় সন্ধ্যা ৬টা ৩৯ মিনিট থেকে ৭টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত, পুনরায় রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ৩টে ৪ মিনিট পর্যন্ত। চৈত্রের প্রচণ্ড গরমের মধ্যে মায়েরা সারাদিন নির্জলা উপবাস রাখেন পরিবার এবং সন্তানের শুভ কামনায়। এরপর সন্ধের পর নীলের ঘরে বাতি জ্বালিয়ে করতে হয় ব্রত সমাপন। কঠিন এই ব্রত করেন বাংলার বহু মায়েরা। এটাই বাংলা বছরের শেষ ষষ্ঠী। অনেকে বাড়িতেই মহাদেবের অভিষেক করেন। বেলপাতা , আকন্দের মালা, দুধ, দই মধু ইত্যাদি মিশ্রিত জল ভগবানকে নিবেদন করে অনেকে উপবাস ভাঙেন।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
অন্যদিকে চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তিতে পালিত হয় বিশেষ অনুষ্ঠান চড়ক পুজো। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় গম্ভীরা পুজো, শিবের গাজন, নীল পুজো নামে চড়ক পুজোর আচার পালন করা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে এই নীতি ও নিয়ম মেনেই চলে আসছে চড়কপুজো। আজও এই পুজোর রীতি প্রথা পরির্বতন হয়নি বিন্দুমাত্র। তবে পুজোর সংখ্যা কমেছে অনেকটা। বর্তমানে হাতে গোনা কিছু জায়গায় এই পুজোর আয়োজন করা হয়। সঙ্গে এই পুজোর জন্য এবার মেলাও বসে।