প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এসএসসির (SSC) ২০১৬ সালের নিয়োগ প্যানেল বাতিল হওয়ার কারণে ২৫ হাজার ৭৫২ জনের চাকরি হারিয়ে ফেলেছে। ভেঙে পড়েছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। এই অবস্থায় পড়ুয়াদের পঠনপাঠন সঠিক রাখার জন্য চাকরিহারা ‘যোগ্য’দের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়ে শীর্ষ আদালতে যায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সেই মামলার আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে শুনানি হয়। সেই শুনানিতে আদালত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষকদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
সুপ্রিম কোর্টের রায়েও অখুশি চাকরিহারারা
সুপ্রিম কোর্টের দরবারে যখন এসএসসি নিয়োগ নিয়ে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না রায় দিচ্ছিলেন সেই সময় চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের একাংশ কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলায় ওয়াই চ্যানেলে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছিল। যখনই প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার রায় ঘোষণা করেন সঙ্গে সঙ্গে যেন এই অবস্থানরত চাকরিহারাদের মধ্যে জোর বিতর্কের সৃষ্টি হয়। একে অপরের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত হয়ে ওঠেন সকলে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায় যে আসলে গভীর ক্ষতে খানিক মলম লাগানোর মত ছিল তা সকলেই বুঝেছে। একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত চাকরি বহাল থাকবে বা বেতন মিলবে কখনোই এমনটা চাইছেন না তাঁরা। যাতে তাঁরা ৬০ বছর বয়স পর্যন্তই সসম্মানে স্কুলে শিক্ষকতা করতে পারেন এমন সমাধান চাইছেন।
কী বলছেন শিক্ষকরা?
এই প্রসঙ্গে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভে বসা চাকরিহারা এক শিক্ষক অরবিন্দ মজুমদার বলেন, “খুব একটা অস্বস্তি কমার আশা দেখতে পারছি না। তার কারণ ৩১ ডিসেম্বর আমার মৃত্যুদিন বলে দেওয়া হল। ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়া হল। তাই সেক্ষেত্রে সেটা কী করে সাময়িক স্বস্তি হবে আমি জানিনা। আমরা সঠিকভাবে চাকরি পেয়েছি। আমাকে আদালত যোগ্য বলছে। তাহলে কেন ৩১ তারিখ পর্যন্ত চাকরি করব? যতদিন চাকরি থাকার ততদিন চাকরি করব।” এছাড়াও আরো এক শিক্ষক জানিয়েছেন, “সাময়িক স্বস্তি থাকলেও পুরোপুরি আশ্বস্ত তো হতে পারছি না। আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। অযোগ্যদের বাদ দিয়ে যোগ্য শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের নিজেদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক।”
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
অন্যদিকে চকরিহারাদের জন্য সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে অনেকে দায়সারা মনোভাব বলে প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে যেমন করে এক অসুস্থ রোগীকে ভেন্টিলেশনে ঢুকিয়ে কয়েকদিনের জন্য বাঁচিয়ে রাখা হয়, তেমনই অবস্থা আমাদের।” এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠন ‘যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর আহ্বায়ক চিন্ময় মণ্ডল জানান, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ একটি কৌশলগত সাফল্য তো বটেই। আমরা কাজ চালিয়ে যেতে পারব। বেতনটা পাব। এটি প্রাথমিক ভাবে কিছু দিনের জন্য স্বস্তি। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সময় আমরা এই রায়ের পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করব।