সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ব্যাংকের সংযুক্তিকরণ (Bank Merger) করতে এবার বড়সড় পদক্ষেপের পথে হাঁটল কেন্দ্রীয় সরকার। এবার দেশের ১৫টি আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাংক একত্রিত হতে চলেছে। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। আর এর মূল লক্ষ্য হল ব্যাংকগুলির কাজের গতি বাড়ানো এবং খরচ কমানো। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক শীঘ্রই চালু করতে চলেছে ‘One State-One RRB’ নিয়ম। যার আওতায় থাকা দেশের মোট ৪৩টি গ্রামীণ ব্যাংক কমে দাঁড়াবে মাত্র ২৮টিতে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
‘One State-One RRB’ নীতি কী?
আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা এবং কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য একটি রাজ্যে মাত্র একটি আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাংক রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। আর এর ফলে প্রতিটি রাজ্যে ব্যাংক পরিচালনার গতি আরো বাড়বে এবং খরচও কম হবে বলে মনে করছে কেন্দ্র।
কোন কোন রাজ্যের ব্যাংক সংযুক্তিকরণ হবে?
আপাতত ১৫টি গ্রামীণ ব্যাংক একত্রিত হবে বলেই খবর। এর মধ্যে যে সমস্ত রাজ্যের ব্যাংক যুক্ত হচ্ছে সেগুলি হল- অন্ধ্রপ্রদেশের ৪টি, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ৩টি করে ব্যাংক, বিহার, গুজরাট, জম্মু ও কাশ্মীর, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা ও রাজস্থানের ২টি করে ব্যাংক। তবে তেলেঙ্গানার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হচ্ছে। সেখানেও অন্ধ্রপ্রদেশ গ্রামীণ বিকাশ ব্যাংকের সম্পদ এবং দায় সংক্রান্ত বিভাজনের সমস্যা মিটে গিয়েছে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
গ্রামীণ ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার উন্নতি
এই সংযুক্তিকরণের পিছনে রয়েছে ব্যাংকগুলির আর্থিক পরিকাঠামোকে আরো শক্তিশালী করে তোলার উদ্দেশ্য। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে কেন্দ্রী সরকার ৫৪৪৫ কোটি টাকার ক্যাপিটাল ইনফিউশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আর এর ফলে ২০২৩-২৪ সালে গ্রামীণ ব্যাংকগুলি ৭৫৭১ কোটি টাকার রেকর্ড লাভ করে। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। এর পাশাপাশি তাদের Capital Adequacy Ratio বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪.২ শতাংশ, যা অতীতের হিসাবে সর্বোচ্চ।
গ্রামীণ ব্যাংকের সংখ্যা কীভাবে হ্রাস পাচ্ছে?
১৯৭৬ সালের আরআরবি আইন অনুযায়ী কৃষক, কৃষি শ্রমিক এবং গ্রামীন কারিগরদের ঋণ ও আর্থিক পরিষেবা দেওয়ার মূল লক্ষ্য নিয়েই গ্রামীণ ব্যাংকগুলি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকগুলির কার্যকরতা বাড়াতে ২০০৪-০৫ অর্থবর্ষে কিছু পরিকাঠামোগত সংযুক্তিকরণ করা হয়। আর এর ফলে ২০০৫ সালে যেখানে ব্যাংকের সংখ্যা ছিল ১৯৬টি, সেখানে ২০২০-২১ তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪৩টিতে। আর এখন ‘One State-One RRB’ নীতির মাধ্যমে আরো একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে সরকার।
কেন্দ্র সরকারের এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র ব্যাংকিং খাতে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য ফেরাবে না। বরং গ্রামীণ অর্থনীতির চাকাকে ঘোরাতে সাহায্য করবে। এর ফলে কর্মক্ষমতা বাড়বে, পরিষেবার গুণগত মান বাড়বে এবং আর্থিক পরিকাঠামো উন্নয়ন হবে।