আধপেটা খেয়ে পড়েছেন হারিকেনের আলোয়, NASA-র জার্নির কাহিনী শোনালেন বাঙালি বিজ্ঞানী

শ্বেতা মিত্র, কলকাতা: গৌতম চট্টোপাধ্যায় (Goutam Chattopadhyay) বাঙালি সমাজের কাছে এক গর্বের নাম। নবগ্রাম থেকে NASA-র একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠার গল্প শুনলে আপনিও হয়তো আকাশ থেকে পড়বেন। পেটে খিদে নিয়ে, আলো আঁধারিতে পড়াশোনা করে এক বাঙালির বিশ্বজয়ের গল্প কোনো সিনেমা-সিরিয়ালের প্লটকে হার মানাবে। আজকের এই প্রতিবেদনে আলোচনা করা হবে নাসার বিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে।


গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন

Join Now

নবগ্রাম থেকে নাসা অবধি জার্নি গৌতম চট্টোপাধ্যায়

গৌতম চট্টোপাধ্যায় হুগলির কোন্নগরের বাসিন্দা। পড়াশোনা করেছেন নবগ্রাম বিদ্যাপীঠ থেকে। সম্প্রতি তাকে নাসার তরফ থেকে ‘পিপল লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’-এ-এ ভূষিত করা হয়েছে। আর এই নিয়ে গর্বের শেষ নেই তাঁর পরিবারের। কিন্তু এক চিলতে ঘর থেকে নাসা অবধি তাঁর পথ চলাটা কিন্তু মোটেও মসৃণ ছিল না। পেরোতে হয়েছে বহু বাধা বিপত্তি।

READ MORE:  প্রথমবার হবে দুর্দান্ত ব্যবস্থা, ত্রিবেণীর কুম্ভ মেলার পাশে দাঁড়াল পশ্চিমবঙ্গ সরকার

কিন্তু সেই যে কথায় আছে না, মনে অদম্য জেদ ও সাহস থাকলে সবকিছু করা যায়। সেটা প্রমাণ করেছেন নাসার বিশিষ্ট বিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে আমেরিকায় থাকেন। স্ত্রী, মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার। মা থাকেন কোন্নগরের এক আবাসনে। নাসার মতো জায়গায় কাজ করলে কী হবে, নিজের শিকড় ভোলেননি। হাতে সময় নিয়ে মাঝে মধ্যেই বাড়ি চলে আসেন।

গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের জীবন সংগ্রামের কাহিনী

এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গৌতমবাবু জানান, নবম শ্রেণীতে পাঠরত অবস্থাতেও বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না। হারিকেনের আলোয় পড়াশোনা করেছেন তিনি। দেখতে দেখতে নাসায় ১২ বছর কাজ করে ফেলেছেন তিনি। গৌতম চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘আসলে স্বপ্ন দেখতে তো কোনও পয়সা লাগে না, তাই বড় বড় স্বপ্ন দেখা যায়। বাড়িতে আসত না নিউজ পেপার।’ তিনি নাকি কাছাকাছি ক্লাবে গিয়ে পড়ে ফেলতেন আনন্দবাজার পত্রিকা ও স্টেটসম্যান। বিজ্ঞানের খবরগুলি গিলতেন গোগ্রাসে। নাসার বিজ্ঞানীদের গবেষণা, আবিষ্কারের কথা পড়ে ভাবতেন….যদি তিনিও হতে পারতেন তাহলে কী না ভালো হত। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় আর্থিক অনটন।

READ MORE:  সাইকেলে করে খাবার বিক্রি করে আজ ১০০০০০০০০০ কোটির ব্যবসা! চেনেন সীতারামকে?

বিজ্ঞানী জানান, দুই-সেট বই কেনার ক্ষমতা ছিল না বলে, ছোট ভাইকেও বাবা-মা ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে একই ক্লাসে। এভাবে একই সঙ্গে পড়াশোনা, এগিয়ে চলা। মহাকাশবিজ্ঞানীর কথায়, ‘ মা-বাবা একটা কথাই বলতেন, আমাদের মতো আর্থিক অবস্থায় একটাই কাজ, ভালভাবে পড়াশোনা করা। পড়াশোনা বা অধ্যাবসায়ের কোনও বিকল্প হয় না। আমরা ৬ ভাইবোন তাই করেছি। মন দিয়ে পড়াশোনা করেছি।’ যাইহোক, এরপর তিনি শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ক্যালিফর্নিয়া টেকনোলজি কলেজে যান। বাকিটা ইতিহাস।

Scroll to Top