আর ঘন্টার পর ঘণ্টায় লাইনে দাঁড়িয়ে হাপিত্যেশ করতে হবে না। এবার বাড়িতে বসে অনলাইনের মাধ্যমেই পাওয়া যাবে পঞ্চায়েতের গুরুত্বপূর্ণ সব সার্টিফিকেট। হ্যাঁ একদম ঠিকই শুনেছেন। রাজ্য সরকার এবার আনতে চলেছে বিশেষ এক মোবাইলে অ্যাপ (Panchayat App), যা পঞ্চায়েত পরিষেবাকে আরো ডিজিটাল এবং সহজ করে তুলবে।
কেন প্রয়োজন এই অ্যাপ?
আসলে পঞ্চায়েত এলাকায় ইনকাম সার্টিফিকেট, ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট, ডিসটেন্স সার্টিফিকেট ইত্যাদি পেতে গেলে নাগরিকদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক সময় পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়াতে হয় অথবা দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। প্রধানকে খুঁজে পাওয়া যায় না।
এমনকি কিছু জায়গায় বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগও সামনে আসে। আর এই সমস্ত সমস্যাকে সমাধান করতেই পঞ্চায়েত দপ্তর বিশেষ একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করতে চলেছে, যার মাধ্যমে এক ক্লিকেই মিলবে ছয় ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সার্টিফিকেট।
কীভাবে কাজ করবে এই অ্যাপ?
প্রথমত নাগরিকরা মোবাইলের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সার্টিফিকেটের জন্য এই অ্যাপে আবেদন করতে পারবে। আবেদন গ্রহণের পর সাত দিনের মধ্যেই সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়া হবে। সরাসরি অনলাইন লেনদেন চালু হলে বেআইনি টাকা নেওয়ার সুযোগও আর থাকবে না।
পঞ্চায়েত দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে, “এই ডিজিটাল প্লাটফর্ম একবার চালু হলে দুর্নীতি কমবে। আর সাধারণ মানুষ সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় সব সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন।”
কোন কোন সার্টিফিকেট মিলবে?
পঞ্চায়েতের এই নতুন অ্যাপের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ছয় ধরনের সার্টিফিকেট ইস্যু করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেগুলি হল-
- ইনকাম সার্টিফিকেট,
- ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট,
- ডিস্টেন্স সার্টিফিকেট,
- জাতিগত শংসাপত্র বা কাস্ট সার্টিফিকেট,
- নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট,
- বসতিভিটার সার্টিফিকেট।
তবে আগামী দিনে আরো নতুন নতুন পরিষেবা যুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার।
পঞ্চায়েত পরিষেবা হবে আরো ডিজিটাল ও স্মার্ট
কয়েকদিন আগেই পূর্ব বর্ধমানের রায়না থেকে পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জানিয়েছেন যে, রাজ্যের প্রতিটি পঞ্চায়েতকে এখন স্মার্ট করে তোলা হবে। অনলাইনে ট্যাক্স প্রদান, গেস্ট হাউস বা হোমস্টে বুকিং, এমনকি সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট পরিষেবা চালু করা হবে।
পৌরসভা এলাকায় যেভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়, এবার সেই একই পদ্ধতি পঞ্চায়েতেও চালু করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। একজন আধিকারিক বলেছেন, অনেক সময় মানুষ আবেদন করতে জানেন না বা অনলাইনে আবেদন করতে অভ্যস্ত নন। সেই সমস্যা সমাধান করার জন্য বাংলা সহায়তা কেন্দ্রেও এই সার্টিফিকেটগুলো পাওয়া যাবে।