বৈশাখ শুরু না হতেই গরমে ঘেমে নেয়ে একাকার অবস্থা জনতার। ফলে স্বস্তি পেতে এখন থেকেই এয়ার কন্ডিশনার (এসি) বা এয়ার কুলার চালানো শুরু করে দিয়েছে বঙ্গবাসী। কয়েক বছর আগে পর্যন্তও ঘর ঠান্ডা করার যন্ত্র শুধু বিলাসিতা হিসাবে ধরা হলেও, এখন তা প্রয়োজনীয়তা হয়ে উঠেছে। এসি কেনার সামর্থ না থাকলে তাদের ভরসা কুলারই। কিন্তু শুধুই কি অর্থ? এসি বা কুলার চালাতে অভ্যস্ত হলেও স্বাস্থ্যের দিক থেকে এগুলি কতটা ক্ষতিকর জানা আছে কি?
এসি ও কুলারের মধ্যে কোনটা বেশি স্বাস্থ্যকর?
প্রথমেই এয়ার কুলারের কার্যপ্রণালী জেনে নেওয়া যাক। এটি মূলত জল বা বরফের মাধ্যমে কাজ করে। এবং বাষ্পীভূত হয়ে ঘরের তাপমাত্রা কমায় এবং আর্দ্রতা বৃদ্ধি করে। যেসব এলাকায় শুষ্ক আবহাওয়া, সেখানে এয়ার কুলার কার্যকর। কিন্তু আর্দ্র এলাকায় ছত্রাক ও ব্যাক্টেরিয়ার বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। এর ফলে, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এটি।
অন্যদিকে, এয়ার কন্ডিশনার বা এসি ঘরের তাপমাত্রা কমিয়ে আর্দ্রতা হ্রাস করে। তবে, নিয়মিত পরিষ্কার না করলে এসির ফিল্টারে ময়লা জমে ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাকের বাসা বাঁধতে পারে, যা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার কারণ হতে পারে। তাছাড়া, ঘরে জলীয় বাষ্পের মাত্রা কমিয়ে দেওয়ার ফলে, ড্রাই আই, ত্বক রুক্ষ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
কলকাতার মতো উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় এসি ব্যবহার কুলারের তুলনামূলকভাবে নিরাপদ হতে পারে। তবে উভয় যন্ত্রই নিয়মিত পরিষ্কার করা অত্যন্ত জরুরি। যাঁদের অ্যালার্জি, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের এয়ার কুলার ব্যবহারে সতর্ক থাকা উচিত। আবার পরিবেশগত দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখলে, এয়ার কুলার বেশি পরিবেশবান্ধব, কারণ এতে কেবল জল ব্যবহার হয় ও ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার কম।
অন্যদিকে, ঘর দ্রুত ঠান্ডা করতে এসি থেকে নির্গত ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ও হাইড্রোফ্লুরোকার্বন গ্যাস ওজোন স্তরের ক্ষতি করতে পারে। তবে, বর্তমান সময়ে অনেক এসিতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। সবশেষে নিজের স্বাস্থ্য, আবহাওয়া এবং বাজেট বিবেচনা করে এসি বা এয়ার কুলার নেওয়া উচিত। উভয় ক্ষেত্রেই নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে।