কলকাতা হাইকোর্ট ১ মার্চ থেকে ১২ নম্বর ন্যাশনাল হাইওয়ে সম্প্রসারণের কাজ শুরু করার অনুমতি দিয়েছে। জমি বিরোধ এবং স্থানীয় বিক্ষোভের কারণে দীর্ঘ বিলম্বের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হাইওয়ে সম্প্রসারণের অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টিকারী স্থানীয় দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্যকে আদালতের সবুজ সংকেত রাজ্যকে অনুমতি দিয়েছে।
জমি বিরোধের কারণে ১২ নম্বর ন্যাশনাল হাইওয়ে সম্প্রসারণ বিলম্বিত হয়েছিল। স্থানীয় জনগণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল, যার ফলে হাইওয়ের বিভিন্ন অংশের কাজ শেষ হয়নি। সমস্যাটি মূলত সরকারি জমিতে দখলের কারণে হয়েছিল, যার ফলে ঠিকাদাররা কাজ চালিয়ে যেতে পারছিলেন না। রাস্তার কাজের জন্য যাদের জমি নেওয়া হয়েছিল তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও, স্থানীয় বিরোধিতার কারণে প্রকল্পটি আটকে ছিল।
হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত
হাইওয়ের জন্য যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল তাদের প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল। তবে, স্থানীয় মানুষ, বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙ্গার মতো এলাকায়, প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিল। এর ফলে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদন করতে না পারার জন্য ঠিকাদারদের জন্য গুরুতর বাধার সৃষ্টি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের আইনজীবী কলকাতা হাইকোর্টকে জানিয়েছেন যে ক্ষতিগ্রস্তদের ৯৫ শতাংশ ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। আদালতকে বলা হয়েছিল যে জেলা প্রশাসন সহায়তা এবং নিরাপত্তা প্রদান করলে কাজ শুরু করা যেতে পারে। এর জবাবে, হাইকোর্ট ১ মার্চ, ২০২৫ তারিখ থেকে কাজ শুরু করার নির্দেশ জারি করে, যাতে কাজ সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে যায় তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ সুরক্ষা প্রদান করা হয়।
কীভাবে এগোবে কাজ?
আরও বিঘ্ন এড়াতে, হাইকোর্ট বারাসতে পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেয়, যেখানে ঠিকাদাররা সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল। যদি স্থানীয় পুলিশ বাহিনী পর্যাপ্ত না হয়, তাহলে জেলা রিজার্ভ ফোর্স ব্যবহার করা যেতে পারে। আদালত আরও উল্লেখ করেছে যে প্রয়োজনে আধাসামরিক বাহিনীও ডাকা যেতে পারে।
উত্তর ২৪ পরগনা, জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ এবং আলিপুরদুয়ারের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়ে কর্তৃপক্ষ (NHAI) যাতে প্রয়োজনীয় সমস্ত সহায়তা পায় তা নিশ্চিত করতে বলেছে। আদালত জেলা কর্মকর্তা, পুলিশ, এনএইচএআই কর্তৃপক্ষ এবং ঠিকাদারদের সাথে একটি বৈঠক করার নির্দেশও দিয়েছে যাতে আর কোনও সমস্যা ছাড়াই কাজ শুরু হয়।
২৭ মার্চ, ২০২৫ তারিখে অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে এবং আদেশগুলি পালন করা হয়েছে কিনা তা আদালতে জমা দিতে হবে। বলা বাহুল্য, ১২ নম্বর জাতীয় মহাসড়কের সম্প্রসারণ বিলম্বিত বাধাগুলি কাটিয়ে ওঠার দিকে কলকাতা হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত একটি বড় পদক্ষেপ।