সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: শিয়ালদহ স্টেশন (Sealdah Station), যা দেশের অন্যতম ব্যস্ত এক রেল হাব! প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রীর ভিড় আর ঠেলাঠেলি, গুঁতোগুঁতি, এ যেন প্রতিদিনের দৃশ্য। এখনও এমন অনেক মানুষ রয়েছে, যাদের দুবেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করতে কালঘাম ছোটে। আর তাদের জন্যই এবার নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে ভারতীয় রেল। এখন মাত্র ১৫ টাকায় মিলছে ‘জনতা মিল’, যাতে দেওয়া হচ্ছে ভরপেট খাবার। আর এই জন আহার স্টল মিলছে শিয়ালদহ স্টেশনের সাউথ সেকশনে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
কী কী থাকছে এই জন আহারে?
১৫ টাকা শুনে হয়তো অনেকেই মনে করবেন, যে সামান্য টিফিন। কিন্তু না, একেবারে সামান্য নয়। পেট ভর্তি করে খাওয়ার মত খাবার দেওয়া হচ্ছে এই ১৫ টাকায়। দেওয়া হচ্ছে প্রায় ১৭৫ গ্রাম ওজনের ৭ পিস গরম কচুরি, ১৫০ গ্রাম আলুর সবজি, ১৫ গ্রাম আঁচার, সঙ্গে একটি কাঁচা লঙ্কা। ভাবতে পারছেন? এই সমস্ত কিছু মিলবে মাত্র ১৫ টাকায়। অবাক লাগলেও এমনই পরিষেবা এনেছে ভারতীয় রেল।
জনসাধারণের জন্য রেলের নয়া উদ্যোগ
রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই উদ্যোগ একমাত্র সাধারণ যাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই আনা। বাংলার তুলনায় দেশের অন্যান্য রাজ্যে জীবনযাত্রার খরচ অনেকটাই বেশি। কিন্তু বাংলার যা হাল, তাতে সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখেই শিয়ালদহ স্টেশনে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
মিলছে সাউথ ইন্ডিয়ান ডিশও…
জানিয়ে রাখি, জন আহার স্টলে শুধু কচুরি নয়। মিলছে সাউথ ইন্ডিয়ান থালি, এমনকি বিরিয়ানির মতো খাবারও। হ্যাঁ, এইসব খাবারের দাম বাজারের তুলনায় অনেকটাই কম। তাই স্টেশনের ব্যস্ততা থাকলেও ক্ষুধার্ত যাত্রীদের পেট ভরানোর জন্য এবার আর দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না।
কীভাবে সম্ভব এত সস্তায় খাবার দেওয়া?
এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, বর্তমানে যেখানে এক প্লেট কচুরি-তরকারির দাম প্রায় ৫০-৬০ টাকা, সেখানে মাত্র ১৫ টাকায় কীভাবে? আর উত্তরটাও রীতিমতো পরিকল্পিত। কারণ, শিয়ালদহ ডিভিশনের পক্ষ থেকে স্টেশন চত্বরে জন আহারের মতো স্টল খোলার জন্য কার্যত টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, অন্যান্য বাণিজ্যিক স্টলের তুলনায় এই স্টলগুলির সিকিউরিটি ডিপোজিটের পরিমাণ অনেকটাই কম রাখা হয়েছে। আর সে কারণেই এত কম দামে এতসব খাবার মিলছে।
আমিষ-নিরামিষের আলাদা ব্যবস্থা!
জানলে অবাক হবেন, এই স্টলে আমিষ-নিরামিষ খাবারের আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। হ্যাঁ, যেহেতু অনেক যাত্রী নির্দিষ্ট কিছু দিনে নিরামিষ খাবার খান, তাই আমিষ-নিরামিষের আলাদা বাসনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সত্যিই ভারতীয় রেলের এই চিন্তাভাবনাকে স্যালুট জানাতে হয়।
আজকের দুনিয়ায় দাঁড়িয়ে সামান্য খাবার পেতেও অনেক সাধারণ মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। সেখানে ভারতীয় রেলের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। জনতা মিলের মত পরিকল্পনা দেশের প্রত্যেকটি স্টেশনে চালু হলে বহু সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।