প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার কলমের আঁচড়ে রাতারাতি চাকরি হারায় এসএসসি কাণ্ডের (SSC Case) প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকারা। যার ফলে অনেক স্কুলেই এখন শিক্ষক নেই। ধীরে ধীরে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা অবনতির দিকে এগোচ্ছে। চিন্তায় পড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বোর্ডের খাতা দেখার বেশ চাপ। তার উপর আবার ইউনিট টেস্ট এর খাতা দেখা নিয়েও বেশ জটিল সমস্যায় পড়েছে শিক্ষকেরা। বাড়তি দায়িত্বে জর্জরিত তাঁরাও।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
বাড়তি খাতা দেখার চাপ শিক্ষকদের
আসলে এপ্রিলের শুরু থেকেই বিভিন্ন স্কুলে শুরু হয়েছে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির প্রথম ইউনিট টেস্ট। এদিকে সেই সময় সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের রায় দিয়েছিল। যার ফলে খাতা নিয়ে বিপাকে পড়েছে স্কুলগুলি। বিভিন্ন বিষয়ে নিজের হাতে প্রশ্নপত্র তৈরি করলেও, চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকে এখন খাতা দেখতে চাইছেন না। তবে খাতা তাঁদের দিয়ে চেক করাতেও জোর দিতে চাইছেন না একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ দিকে, এপ্রিলের শেষে অর্থাৎ আগামী ৩০ এপ্রিল গরমের ছুটি পড়ার কথা। তার আগেই খাতা দিতে হবে পড়ুয়াদের। তাই উপায় বার করতে এই অবস্থায় কোথাও পার্শ্ব-শিক্ষক, কোথাও স্কুলের শিক্ষকদের পরীক্ষার বাড়তি খাতা দেখতে দেওয়া হয়েছে।
পড়ানোর চাপও পড়ছে পার্শ্ব-শিক্ষকদের ওপর
তবে শুধু খাতা দেখা নয়, পড়ানো নিয়েও বেশ চাপে পড়তে হচ্ছে। অনেক স্কুল রয়েছে যেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা কয়েক হাজারের বেশি। সেই সমস্ত স্কুলগুলিতে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষক না থাকায় আরও বেশি সমস্যা হচ্ছে। এরফলে অতিরিক্ত খাতা দেখার পাশাপাশি ক্লাস করতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। ফলে চাপ বাড়ছে পার্শ্ব শিক্ষক, অন্যান্য শিক্ষকদের ওপর। যেমন উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বীরগ্রাম হাই স্কুল। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ওই স্কুলে বিজ্ঞান বিষয়ে কোনও শিক্ষক না থাকায় পার্শ্ব-শিক্ষক ও বাকি শিক্ষকদের পরীক্ষার খাতা দেখতে হচ্ছে। আবার সময়ে সময়ে পড়ুয়াদের ক্লাস নিয়ে হচ্ছে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
অন্যদিকে নদিয়ার দেবগ্রাম ডি কে গার্লস হাই স্কুলের প্রায় ১৬০০ পড়ুয়ার খাতা দেখে নম্বর পোর্টালে আপলোড করা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রীতা দত্ত বলেন, “দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে আট হাজার খাতা মূল্যায়ন করতে হবে। অথচ, স্কুলে এখন এক জনই অঙ্কের শিক্ষক।” ফলে খাতা দেখা শেষ কবে হবে এবং কবে ফল প্রকাশ হবে তা নিয়ে বেশ ধন্দে সকলে। সবকিছুতেই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এদিকে আবার চাকরিহারা শিক্ষক অশিক্ষক কর্মীদের স্কুলে যাওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই শিক্ষা দফতরকে আদালত অবমাননার নোটিশ দেওয়া হয়েছে।