বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: চিন সফরে গিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারত নিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য ছুঁড়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। মূলত নিজেদের সমুদ্রের অভিভাবক দাবি করে একেবারে বেয়াক্কেলে মন্তব্য করে বসেন ওপার বাংলার প্রধান। যদিও সেই মন্তব্যের চাঁচাছোলা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, বঙ্গোপসাগরে ভারতের ক্ষমতা কতটা। এবার হাসির ছলে সুদূর ব্যাঙ্ককে BIMSTEC সম্মেলন চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ইউনূসকে ঠান্ডা স্বরেই বুঝিয়ে দিলেন তাঁর মন্তব্য একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়! সেই সাথেই উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটাতে নতুন পরিকল্পনাও(India’s New Plan) জানালেন প্রধানমন্ত্রী। যা আগামী দিনে বাংলাদেশ ও চিনের মতো ভারত বিরোধী দেশগুলির চিন্তার কারণ হয়ে উঠবে।
উন্নয়নের প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল!
সম্প্রতি চিনের মাটিতে দাঁড়িয়ে অভিভাবকত্ব দেখাতে গিয়ে ভারতকে নিশানা করেছিলেন ইউনূস। এবার সেই কটাক্ষের পাল্টা জবাব কাজেই বুঝিয়ে দিলেন মোদি। সূত্রের খবর, থাইল্যান্ডে BIMSTEC সম্মেলন চলাকালে উত্তর-পূর্ব ভারতকে এশিয়ার দেশগুলির উন্নয়নের প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
জানা গিয়েছে, BIMSTEC এজেন্ডার মূলে রয়েছে একটি সামুদ্রিক পরিবহন চুক্তি, যা সাধারণত ভারত এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে আন্ত-আঞ্চলিক বাণিজ্যকে বাড়িয়ে তুলবে। সূত্র বলছে, এই বৃহৎ চুক্তির দৌলতে যে শুধুমাত্র ভারতের বাণিজ্য বাড়বে তাই নয়, সেই সাথে প্রশান্ত মহাসাগরে নয়া দিল্লির প্রভাবও অনেকটাই চওড়া হবে।
বিরাট পরিকল্পনা ভারতের
সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রধানের তুমুল আত্মবিশ্বাসী মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছিল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। মন্ত্রি পর্যায়ের বৈঠকে ভারত সরকারের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে বিদেশ মন্ত্রী জয়শঙ্কর জানিয়েছিলেন, বঙ্গোপসাগরে ভারতের দীর্ঘতম উপকূল রেখা রয়েছে, যা কমপক্ষে 6,500 কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। সেই সাথেই বিদেশ মন্ত্রী বলেন, ভারত শুধুমাত্র BIMSTEC-র 5 দেশের সাথে সীমানা ভাগাভাগি করে না, বরং তাদের বেশিরভাগকেই রেলপথে, সড়কপথে ও বিভিন্ন গ্রেডে যুক্ত করে।
বলা বাহুল্য, BIMSTEC দেশগুলির বর্তমান সম্মিলিত জনসংখ্যা 1.73 বিলিয়ন। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই দেশগুলির অর্থনৈতিক গঠন 5.2 ডলারেরও বেশি। বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ দাবি করছেন, এই ব্লকগুলির মধ্যে পারস্পারিক সংযুক্তিকরনের মাধ্যমে ইন্দ্র প্যাসিফিক অঞ্চলের বাণিজ্যিক চেহারা বদলে যেতে পারে।
বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ব রাজনীতিতে যেভাবে পরিস্থিতির বদল ঘটছে, ভূ রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে, সেইসব বিষয়গুলিকে বিবেচনা করে প্রথমত থাইল্যান্ডকে ভারতের উত্তর-পূর্ব এবং উপকূলীয় অঞ্চলের সাথে যুক্ত করতে চেয়েছে দিল্লি। মনে করা হচ্ছে, ভারতের এই প্রকল্প সম্পন্ন হলে আগামী দিনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, বিশেষ করে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন্সের মতো দেশগুলির মধ্যে ভারতের সখ্যতা ও বাণিজ্যিক পথ সম্প্রসারিত হবে।
অবশ্যই পড়ুন: চিন সফরে হুঙ্কার ছেড়েছিলেন ইউনূস! জেনেও বৈঠক সারলেন মোদি, নেপথ্যে কোন রহস্য?
এদিকে দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের সাথে তীব্র বিরোধিতা রয়েছে এই দেশগুলির। ফলত, প্রকল্পের দরুণ সরু রাস্তা করতে পারলে বড় সুবিধা পাবে ভারত। ওয়াকিবহালমহল মনে করছে, ভারতের এই নতুন পরিকল্পনার দৌলতে সড়ক পরিবহনের পাশাপাশি BIMSTEC দেশ গুলির মধ্যে সামুদ্রিক পরিবহন চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে আগামী দিনে অঞ্চলভিত্তিক ও পারস্পরিক বাণিজ্য সহজ থেকে সহজতর হবে। যার ফলে আদতে লাভ হবে ভারতের।