সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: কথায় হলে সবার জন্য আইন সমান। কিন্তু আবার সেই আইনই কখনো কখনো এমন ভুল করে বসে, যে গোটা আদালত স্তব্ধ হয়ে যায়। হ্যাঁ, সম্প্রতি এমনই একটি অদ্ভুত এবং লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের এক আদালতে, যেখানে চোর ধরতে গিয়ে পুলিশ বিচারককে গ্রেফতার (Judge Arrested) করেছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
কী হয়েছিল আসলে?
২৩শে মার্চের ঘটনা। আদালতে শুনানি চলছিল একটি চুরির মামলার। অভিযুক্ত রাজকুমার ওরফে পাপ্পু, যিনি পলাতক। তাই বিচারক নাগমা খান, যিনি এই মামলার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে CrPC ধারা ৮২ অনুযায়ী (CrPC Section 82) ঘোষণাপত্র জারি করেছিল। আর এই নির্দেশ পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট থানায়, যাতে পুলিশ অভিযুক্তকে খোঁজ করে আদালতে হাজির করে।
তাহলে ভুল কোথায় ছিল?
আসলে এই ঘটনায় বিপত্তি বাধিয়ে দেন থানার এক সাব-ইন্সপেক্টর। বিচারকের জারি করা ঘোষণাপত্রটিকে তিনি ভুলবশত ‘নন-বেলেবল ওয়ারেন্ট’ বলে ধরে নেন। আর এত বড় ভুল, যেখানে অভিযুক্তের নাম লেখার কথা ছিল, সেখানে তিনি লিখে ফেলেন স্বয়ং বিচারকের নাম- নাগমা খান। আর এরপর কী হল? পুলিশ গিয়ে হাজির হয় বিচারক নাগমা খানের ঠিকানায় তাকে গ্রেফতার করতে। মানে ভাবতে পারছেন!
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
আদালতে এই নিয়ে তোলপাড় ঘটনা
২৩শে মার্চ যখন মামলাটির শুনানি চলছিল, তখন বিচারক নাগমা খান নিজেই ওই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আর তখনই পুলিশ স্পষ্ট জানায় অভিযুক্ত, নাগমা খান আদালতে অনুপস্থিত। আর এই কথা শুনে গোটা আদালত হতবাক। বিচারক তখনই পুরো বিষয়টিকে স্পষ্ট করেন এবং পুলিশকে চরম ভর্ৎসনা করেন।
বিচারকের মন্তব্য
বেশ কিছু রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বিচারক বলেছেন, “এটি অন্যতম লজ্জাজনক ঘটনা। সংশ্লিষ্ট থানার আধিকারিকদের মধ্যে আদালতের নির্দেশ বোঝার মত সামান্য জ্ঞানটুকুও নেই। কে আদেশ দিয়েছেন আর আদেশটি কার বিরুদ্ধে তাও তারা বুঝতে পারেনি।”
তিনি আরো জানান, অভিযুক্তকে খুঁজে খুঁজে বার করার নির্দেশ ছিল CrPC ধারা ৮২ ধারা অনুযায়ী। কিন্তু পুলিশ সেটিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছে এবং যার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, তার বদলে তিনি বিচারককেই খুঁজতে গিয়েছে।
পুলিশের দক্ষতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে থানার আধিকারিকদের নিয়ে। হ্যাঁ, তাদের আইনি জ্ঞান এবং দক্ষতা নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন তুলছে সাধারণ মানুষ। একটি সাধারন ঘোষণা কীভাবে এমন বিপর্যয় ডেকে আনলো তা নিয়ে এখন তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে অন্দরমহলে। এই ঘটনা যেমন একদিকে হাস্যকর, তেমনই উদ্বেগজনক।