সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: হিমালয়ের পাদদেশ ঘেঁষে অবস্থিত পহেলগাঁওয়ের বৈসরণ ভ্যালি (Kashmir Attack), যা সবুজ উপত্যকা, ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য পর্যটকদের কাছে ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ নামেই পরিচিত। কিন্তু ২২ এপ্রিল সকালে যেন সেই শান্ত আবহাওয়ায় নেমে আসে এক বিভীষিকা অন্ধকার।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
হ্যাঁ, একদল পর্যটক যখন এই অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে ব্যস্ত, তখন জঙ্গি হানায় রক্তাক্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। সুত্রের খবর, এই ভয়াবহতার মধ্যে একজন স্থানীয় যুবক সৈয়দ আদিল হুসেন শাহ, তার সাহসিকতার এক ইতিহাস লিখে গিয়েছেন নিজের প্রাণ বলিদান দিয়ে।
কী ঘটেছিল ঠিক?
আসলে পহেলগাঁওয়ের বৈসরণ উপত্যকার ঠিক পাশেই রয়েছে একটি ঘন জঙ্গল। সুত্রের খবর, সেখান থেকে আচমকা স্থানীয় পোশাকে মুখ ঢাকা একদল অস্ত্রধারী জঙ্গি বেরিয়ে আসে। আর আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত জঙ্গিরা প্রথমে পর্যটকদের কাছে তাঁদের পরিচয় জানতে চেয়েছিল। তারপর ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ পাওয়ার পরেই শুরু হয় গুলিবৃষ্টি। ভয়ে যে যেদিকে পেরেছে ছুটে পালিয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে রক্তবন্যা বয়ে যায় গোটা এলাকায়।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
একা দাঁড়িয়ে লড়াই করল সৈয়দ
২৬ বছরের যুবক সৈয়দ আদিল হুসেন শাহ। পেশায় একজন টাট্টু ঘোড়ার চালক। তার কাজ ছিল পর্যটকদের এই অপূর্ব উপত্যকায় নিয়ে আসা। অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও স্থানীয় গাড়ি পার্কিং থেকে ঘোড়ায় করে পর্যটকদের নিয়ে এসেছিল বৈসরণে। কিন্তু আচমকায় সেই জঙ্গিদের মুখে পড়েন সৈয়দ।
কিন্তু না, তিনি থেমে থাকেননি। তিনি এক জঙ্গির দিকে তেড়ে গিয়ে তার হাত থেকে রাইফেল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাদের নাম তো জঙ্গি! তারা তো আর ছেড়ে কথা বলার মানুষ না.. মুহূর্তের মধ্যেই সৈয়দের শরীর ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয় গুলিতে। গুলি খেয়ে জায়গায় লুটিয়ে পড়েন তিনি।
পরিবারের একমাত্র ভরসা ছিল সৈয়দ!
সৈয়দের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকস্তব্ধ তার পরিবারসহ গোটা দেশ। তার বাবা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, প্রতিদিনের মতো ও কাজে গিয়েছিল। কিন্তু দুপুর ৩টের দিকে হামলার খবর এল। ফোন করে ওকে পাইনি। সুইচ অফ ছিল।
বিকেল ৪:৪০ নাগাদ ফোন চালু হলেও কোন রকম উত্তর মেলেনি। স্থানীয় থানায় ছুটে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন যে, সৈয়দ বেঁচে নেই। পরিবারের আক্ষেপ, যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে যেন কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।