প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক কল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং প্রকল্পের উদ্ভব করে চলেছে। এমনকি রাজ্যের পড়ুয়াদের সুবিধার জন্য অনেকগুলি প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার মধ্যে অন্যতম হল কন্যাশ্রী প্রকল্প এবং সবুজ সাথী প্রকল্প (Sabuj Sathi Scheme)। এই কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে যেমন দরিদ্র এবং মেধাবী পড়ুয়ারা আর্থিক সুবিধা পান ঠিক তেমনই স্কুলে আসার ক্ষেত্রে তাদের যাতে যাতায়াতে কোনো সমস্যা না তৈরি হয় সেই জন্যও সবুজসাথী প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
সবুজ সাথী প্রকল্পের জন্য টাকা নিচ্ছে স্কুল
সরকারের এই সবুজসাথী প্রকল্প চালু হয়েছিল ২০১৫ সালে। অধুনা ঝাড়গ্রাম জেলার, নয়াগ্রামে একটি প্রশাসনিক সভা থেকেই এই প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল সরকারি বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর সকল ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল বিতরণ করা। তাও আবার বিনামূল্যে। সেই মোতাবেক সরকারি স্কুল পড়ুয়াদের প্রতি বছর সাইকেল প্রদান করা হয়। কিন্তু এবার সবুজ সাথী সাইকেল দেওয়ার বদলে পড়ুয়াদের থেকে মাথাপিছু ১০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলতলির পাঁচুয়াখালি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
রশিদ ছাড়াই নেওয়া হচ্ছে টাকা!
অভিভাবকদের অভিযোগ সরকারি এই প্রকল্পে সাইকেল নিতে গেলে প্রতি সাইকেল পিছু দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা। এবং এক কপি ছবি। আর এই নির্দেশ খোদ চালু করেছেন কুলতলির পাঁচুয়াখালি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এবং যদি কেউ টাকা না দেয় তাহলে তাঁকে সাইকেলও দেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীরা জানাচ্ছেন যে টাকা না দিলে স্যার নাকি খুব বকছেন। এমনকি তাঁদের দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা ও এক কপি। এদিকে টাকা দিলেও মিলছে না কোনো রশিদ। অর্থাৎ টাকা দিয়ে বিনা রশিদেই স্কুল থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে সবুজ সাথী প্রকল্পের সাইকেল।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
এই প্রসঙ্গে সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বললে তিনি দাবি করেন সবুজ সাথী প্রকল্পের সাইকেল নিয়ে আসতে হয় জামতলা থেকে। সেই সাইকেল আনার গাড়ি খরচ বাবদ এই টাকা নেওয়া হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে। নিয়ম না থাকলেও কিছু করার নেই বলেই তাঁর দাবি। এই নিয়ম কোন জেনারেল মিটিং ছাড়াই তিনি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও এই ঘটনা এই প্রথম নয়, এর আগে সবুজ সাথী সাইকেল দেওয়ার বদলে পড়ুয়াদের থেকে মাথাপিছু ১০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল পাঁশকুড়ার প্রতাপপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
আবার কোনো কোনো স্কুলে সবুজ সাথী সাইকেল দেওয়ার বদলে পড়ুয়াদের থেকে মাথাপিছু ২০০-৩০০ টাকা নিচ্ছে প্রশ্ন শিক্ষকেরা। বিনামূল্যের এই প্রকল্পে কেন টাকা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তাঁরা অভিযোগ করেন যে এতগুলো সাইকেল যেহেতু গোডাউনে রাখা হয় সেখানকার ভাড়া, আবার সাইকেল নিয়ে আসার গাড়ি ভাড়া, এসবের পেছনে লেবার চার্জ সব মিলিয়ে অনেক খরচ পোহাতে হয় স্কুলগুলোকে। তাই বাধ্য হয়েই নিতে হয় এই টাকা। এদিকে কুলতলির পাঁচুয়াখালি হাইস্কুলের খবর ছড়িয়ে পড়তে শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক তরজা। কুলতলির বিধায়ক গনেশ চন্দ্র মণ্ডল অবশ্য বিষয়টি জানতে পেরে ছাত্র ছাত্রীদের টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েছেন।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।