প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিগত কয়েক দিন ধরেই খবরের শিরোনামে রয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা। সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে গত শুক্রবার থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের একটি অংশ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে। গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে আগাম সতর্কতা হিসাবে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার ছ’টিরও বেশি থানা এলাকায় যৌথবাহিনী মোতায়ন করা হয়েছে। টহল দিচ্ছে বিএসএফ এবং পুলিশবাহিনী। আর এই অশান্তির আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা রাজ্য জুড়ে। তাইতো শান্তি ফেরানোর জন্য এবং বেশি পুলিশি সক্রিয়তার দাবিতে এবার কলকাতার রাজপথে নামল বাংলা পক্ষ (Bangla Pokkho)।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
ময়দানে নামল বাংলা পক্ষ
ওয়াকফ আইনের বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে সুতি, সামসেরগঞ্জ, ধুলিয়ান-সহ একাধিক এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ংকর হয়ে উঠেছিল যে সামাল দিতে গিয়ে রীতিমত কালঘাম ছুটেছে প্রশাসনের। এদিকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে স্থানীয় বাসিন্দারাও নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে ভিটে-মাটি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। গঙ্গা পার করে নৌকা বোঝাই করে মালদার বৈষ্ণবনগরে এসে ঠাঁই নিচ্ছে। কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের পারলালপুর হাইস্কুলে তাঁদের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। এই আবহে তাই হামলাবাজদের গ্রেপ্তার ও আরও বেশি পুলিশি সক্রিয়তার দাবিতে মিছিলে নামল বাংলা পক্ষ। গত সোমবার সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারা এই দাবি নিয়ে সরব হয়েছেন।
মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বার্তা বাংলা পক্ষের
প্রতিবছর পয়লা বৈশাখের পুণ্য লগ্নে বাংলা পক্ষ বাঙালি জাতির ব্যবসা উদযাপন করতে ‘টাকা মিছিল’ করে। কিন্তু এ বছর সেই মিছিলে আমূল পরিবর্তন তুলে ধরেছে বাংলা পক্ষ। মুর্শিদাবাদে দাঙ্গা পরিস্থিতিকে সামনে রেখে এদিন বাংলা পক্ষ প্রতিবাদের মিছিলে নেমেছে। শপথ করেছে, ‘দাঙ্গাবাজদের চামড়া, গুটিয়ে নেব আমরা’। এছাড়াও তাদের মিছিলে সকল বাঙালিকে জোটবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
বাংলা পক্ষ আরও বলে যে, “বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। বাঙালির রক্তে ভোট গোনা নয়, আমরা বাঙালির আশা, ভরসা, ভালোবাসার বাংলা চাই। যে বাংলায় ১০-১৫ বছরের ছেলে দাঙ্গায় যাবে না, পড়াশোনা করবে। এবং আগামিদিনে চাকরি-ব্যবসায় অধিকারের দাবিতে লড়াই করবে।”
জানা গিয়েছে, বাংলা পক্ষের এই মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও সেই মিছিলে ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, শীর্ষ পরিষদ সদস্য অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়, সৌম্যকান্তি ঘোড়ই, শিল্পী পক্ষর অধিকর্তা প্রবাল চক্রবর্তী প্রমুখ। এদিকে মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি খানিকটা নিয়ন্ত্রণে আসে স্থানীয় মানুষজন বাইরে বেরোচ্ছে, দোকানপাট খুলছে। গুটিকয়েক লোক কাজে যাচ্ছেন। তবে ঘরে ফেরার ব্যাপারে পুলিশ বার বার আশ্বস্ত করলেও এইমুহুর্তে মালদহের পারলালপুর হাই স্কুলের শিবির থেকে কেউই গঙ্গার ওপারে থাকা মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যাননি।