প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: গত ১৭ মার্চ এক নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা সংক্রান্ত একটি মামলায় তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট (Allahabad High Court) এর রায়ে। সেই পকসো আইনে দায়ের হওয়া মামলায় বিচারপতি সঞ্জয় কুমার সিংহ বলেছিলেন, নাবালিকার স্তনে হাত দেওয়া যৌন অপরাধ নয়। আর হাইকোর্টের এই রায় নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক তৈরি হয়। ওই রায়ের বিতর্কিত অংশটি অপসারণের দাবি জানিয়ে আবেদন করা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। এদিন দাবি করা হয়েছিল, ভবিষ্যতে বিচারকরা যাতে এই ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য করতে না পারেন, সেই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট যেন নির্দেশিকা জারি করে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
বিচারপতির পর্যবেক্ষণে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ
অবশেষে এই ঘটনায় এলাহাবাদ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণকে ‘অসংবেদনশীল’ বলেও উল্লেখ করল সুপ্রিম কোর্ট। এবং এলাহাবাদ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণকে স্থগিতাদেশ দেন। এছাড়াও এদিন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এলাহাবাদ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণকে উল্লেখ করে জানান, ‘হাইকোর্টের বিচারপতির অসংবেদনশীলতাই প্রকাশ পেয়েছে এই পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে। চার মাস পরে মামলার রায়দান করার সময় এই পর্যবেক্ষণ করা হয়। ফলে, বুদ্ধি খাটানোর পর্যাপ্ত সময় পাওয়া গিয়েছে। সাধারণত আমরা স্থগিতাদেশ দিই না। তবে এ ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণটি অমানবিক বলেই মনে করা হচ্ছে। ফলে এই পর্যবেক্ষণে স্থগিতাদেশ দেওয়া হলো।’
ধর্ষিতাকেই অপরাধের জন্য দায়ী করলেন বিচারপতি
এদিকে এক ধর্ষণের মামলায় বিচারপতি ধর্ষিতাকেও অপরাধের জন্য দায়ী করেছেন। জামিন দিয়েছেন অভিযুক্তকে। সূত্রের খবর, উত্তর প্রদেশের নয়ডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন ওই তরুণী। সে তিন বন্ধুর সাথে দিল্লির একটি বারে গিয়েছিল আর সেখানেই তার পরিচিত কিছু লোকের সাথে দেখা হয়েছিল, যার মধ্যে অভিযুক্ত সেই যুবকও ছিল। সিসিটিভির ফুটেজ থেকে পুলিশ জানতে পারে তারা সেখানে ভোর তিনটে পর্যন্ত ছিল। এরপর নয়ডা পুলিশের কাছে তরুণীর অভিযোগ, অভিযুক্ত তরুণ নেশাগ্রস্ত হয়ে তাঁকে বারে বারে প্রস্তাব দেয় তাঁর গাড়িতে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার। এরপর তরুণী সেই প্রস্তাবে রাজি হয়। কিন্তু তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে না দিয়ে অভিযুক্ত তাঁকে তার এক পরিচিতের ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে তোলে। আর সেখানেই তাঁকে ধর্ষণ করে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
কিন্তু সেক্ষেত্রে এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি রায়ে বলেছেন, মেডিক্যাল রিপোটে সঙ্গমের কথা বলা হলেও জবরদস্তি কিছু হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা উল্লেখ করেননি। অন্যদিকে, তরুণ দাবি করেছে, মেয়েটির সম্মতি নিয়ে তারা শারীরিকভাবে মিলিত হয়েছিল। বিচারপতির মনে হয়েছে, মেডিক্যাল রিপোর্ট এবং তরুণীর বয়ান থেকে তরুণের বক্তব্য বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে। তাই তিনি অভিযুক্তের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। আর বিচারপতির এই রায় প্রকাশ্যে আসতেই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, রায়টি বিতর্কিত। এবং পুলিশের তদন্তেও যথেষ্ট ফাঁক ছিল বলে অনেকে মনে করছেন।