নিমিষেই ধূলিসাৎ হবে জিনপিংয়ের সাম্রাজ্য! গোলাগুলি নয়, আমেরিকার অন্য অস্ত্রে কাঁপে চিন

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সব থেকে বড় দুঃস্বপ্ন কোন নিউক্লিয়ার অস্ত্র, F-35 যুদ্ধবিমান বা সাবমেরিন নয়! বরং এমন একটি আইন, যা চীনের শীর্ষ নেতাদের দুর্নীতির জাল উন্মোচন করে দিতে পারে। আমেরিকার কংগ্রেস ২৩শে ডিসেম্বর ২০২২ সালে ‘Public Law 117-263’ পাশ করেছিল, যা বর্তমানে ‘National Defense Authorization Act for Fiscal Year 2023’ নামেও পরিচিত। এই আইনের Section 6501 বর্তমানে শি জিনপিং এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির জন্যে এখন সব থেকে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। 


গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন

Join Now

চীনের বিরুদ্ধে আমেরিকায় নতুন অস্ত্র

চীনের এই আইনের Section 6501-এর শিরোনামই যথেষ্ট চাঞ্চল্যকর হয়ে উঠেছে। এই আইনের ধারা অনুযায়ী, আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানকে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে পরামর্শ করে কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদের সম্পদ এবং দুর্নীতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। শুধু এখানেই শেষ নয়। এমনকি এই প্রতিবেদনে শি জিনপিং, পলিটব্যুরো, পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটি, সেন্ট্রাল কমিটির সিনিয়র লিডারশিপ এবং অন্যান্য আঞ্চলিক কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের নাম থাকাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

READ MORE:  Kailash Yatra: পর্যটকদের জন্য সুখবর! ভারত-চিন চুক্তির জেরে ৫ বছর পর খুলছে কৈলাস মান সরোবর যাত্রার রাস্তা | India China Agreement to Resume Kailash Man Sarovar Yatra Soon

শি জিনপিং-এর চিন্তার কারণ কী?

চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সবসময় নিজেদের নির্লোভ এবং দেশের সেবায় নিয়োজিত বলে প্রচার করে থাকে। কিন্তু বাস্তবে CCP-এর শীর্ষ নেতাদের বিদেশে প্রচুর গোপন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সম্পত্তি এবং ব্যবসা রয়েছে, যা জনসাধারণের কাছে প্রকাশিত হলে সরকারের পতন হতে পারে। চীনে বর্তমানে ৬০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ দিনে মাত্র ৬৩০ টাকা বা তার কম আয় করে বেঁচে রয়েছে। শি জিনপিং যখন সাধারণ চীনা নাগরিকদের অর্থনৈতিক কষ্ট সহ্য করার কথা বলছিলেন, তখন CCP-এর শীর্ষ নেতারা বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির মালিক! এই তথ্য প্রকাশ পেলে চীনের জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসতে পারে এটা স্বাভাবিক।


বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে

Join Now

১৯৪৯ সালে চিয়াং কাই-শেকের নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী কুওমিনটাং সরকার দুর্নীতির কারণে সেবার পরাজিত হয়েছিল এবং চীন থেকে পালিয়ে তাইওয়ানে আশ্রয় নিয়েছিল। শি জিনপিং জানেন, কমিউনিস্ট পার্টির দুর্নীতির তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে সরকারকে আর কোনভাবেই রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

READ MORE:  ফের ঘনাচ্ছে নিম্নচাপ, বাংলার জেলায় জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস, নামতে পারে তাপমাত্রার পারদ

এর আগেও চীনের দুর্নীতি ফাঁস হয়েছিল

২০১২ সালে Bloomberg এবং দ্যা নিউইয়র্ক টাইমস প্রথমবার CCP-এর শীর্ষ নেতাদের দুর্নীতির তথ্য ফাঁস করেছিল। তারা প্রকাশ করেছিল যে, শি জিনপিং-এর পরিবারের সদস্যদের বিদেশে বিশাল সম্পত্তি রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর বিদেশী ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং বিলাসবহুল সব সম্পত্তি। চীনা সরকার তখন ভয়ংকর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। Bloomberg এবং NYT-এর সাংবাদিকদের উপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়েছিল। এমনকি চীনে তাদের ব্যবসায়ীক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছিল। কিন্তু এখন Public Law 117-263-এর অধীনে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা ১০০ বিলিয়ন ডলার বাজেট নিয়ে CCP-এর সম্পদ অনুসন্ধান করবে, যা চীনের জন্য একটি ভয়ংকর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

READ MORE:  বিনামূল্যের রেশন বন্ধের পথে, মধ্যবিত্ত ও দরিদ্রদের জন্য বড় আঘাত

প্রতিবেদন এখনও অপ্রকাশিত

এই প্রতিবেদনের প্রাথমিক রিপোর্ট ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৩ এর মধ্যে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব হয়নি। সেই প্রতিবেদন এখনও প্রকাশই করা হয়নি। আগের পররাষ্ট্র Antony Blinken এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান Avril Haines ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। তবে এখন নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নিয়েছে। ফলে এই রিপোর্ট প্রকাশের সম্ভাবনা আবারো দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে মার্কো রুবিও আমেরিকার নতুন পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন, যিনি CCP-এর সমস্ত দুর্নীতির কথা ফাঁস করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

শি জিনপিং এবং তার শীর্ষ নেতাদের সম্পদের তথ্য যদি ফাঁস হয়ে যায়, তাহলে এতে চীনের বিশাল রাজনৈতিক সংকট তৈরি হতে পারে। আমেরিকার Public Law 117-263 কমিউনিস্ট পার্টির জন্য পরমাণু অস্ত্রের চেয়েও ভয়ঙ্কর প্রমাণিত হতে পারে। এখন দেখার বিষয় শি জিনপিং এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেয় এবং আমেরিকা এই প্রতিবেদন প্রকাশ করার সাহস দেখায় কিনা।

Scroll to Top