‘নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ পুলিশ’, ৭ দিনের সন্তানকে কোলে নিয়ে ঘর ছাড়লেন মুর্শিদাবাদের মা
প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ওয়াকফ সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে মুর্শিদাবাদে অশান্তি (Murshidabad Violence) যেন ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর দুষ্কৃতীদের একের পর এক হামলায় রীতিমত বেসামাল হয়ে উঠেছে প্রশাসন ব্যবস্থা। যদিও মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজ্য পুলিশের ডিজি নিজে। তৈরি হয়েছে রাজ্যের দক্ষ আইপিএস-দের নিয়ে স্পেশ্যাল টিমও। কিন্তু এত কিছুর পরেও বুকে বিল পাচ্ছে না সেখানকার স্থানীয়রা। তাই সবকিছু ছেড়ে নিজেদের প্রাণ রক্ষার্থে বহু মানুষ ভাগীরথীতে খেয়াপার করে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন মালদায়।
গতকাল সকাল থেকেই একের পর এক যাত্রী-বোঝাই নৌকা আসছে মুর্শিদাবাদ থেকে। ভাগীরথীর একদিকে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান, ডাকবাংলো, সামশেরগঞ্জের মতো এলাকা আর অন্যদিকে বড় অংশে মালদার বৈষ্ণবনগর। হিংসা থেকে বাঁচতে নদী পেরিয়ে এখন এই বৈষ্ণবনগরেই এসে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। আপাতত তাঁদের ঠাঁই দেওয়া হয়েছে একটি স্কুলে। অনেকে আবার আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়দের বাড়িতে। TV9 বাংলার রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই হিংসার থেকে বাঁচতে মায়ের সঙ্গে ঘর ছাড়তে হয়েছে ৭ দিনের শিশুকেও। মালদায় পালিয়ে আসা সেই ছোট্ট শিশুর মা ধুলিয়ানের বাসিন্দা সোমা মাজি বলেছেন, “ সন্তানের বয়স মাত্র ৭ দিন, এখনও নাম ঠিক হয়নি। আঁতুড়ও ওঠেনি। কিন্তু সন্তানের আনন্দ-সুখ বোঝার আগেই ঘরছাড়া হতে হল। এই বয়সেই তার গায়ে সেঁটে গিয়েছে শরণার্থী তকমা।”
এদিন সোমা দেবী জানান, “ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ-আন্দোলনে জ্বলছে মুর্শিদাবাদ। গত শনিবার সকালে দুষ্কৃতীরা ঘরের মধ্যে ঢুকে তাণ্ডব দেখাতে শুরু করেছিল। একের পর এক বোমা পড়ছিল। কেঁপে উঠেছিল কোলের সন্তান। এরপর দুষ্কৃতীরা বাড়ির ভিতরে ঢুকে গ্যাসের সিলিন্ডার খুলে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দাউ দাউ জ্বলতে থাকা আগুনের ভিতর থেকেই কোনো রকম করে সাতদিনের সন্তানকে নিয়ে বেরিয়ে আসি। তারপর নৌকোয় করে এখানে আশ্রয় নিয়েছি।” এইমুহুর্তে ওই সদ্যোজাত মায়ের কোলে ঘুমাচ্ছে। গায়ে ধুম জ্বর। একরত্তিকে নিয়ে চিন্তায় দু-চোখের পাতা এক করতে পারছেন না তিনি। এদিকে তাঁর স্বামী বিদেশে কাজ করে। জানা গিয়েছে তাঁর বাড়ি-ঘর সব জ্বালিয়ে দিয়েছে। এবং গয়না-টাকা সব লুট করে নেওয়া হয়েছে।
শুধু সোমা দেবী নয়, প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই নদী পেরিয়ে পালিয়ে এসেছেন মালদায়। ধুলিয়ানের বাসিন্দা জানকী মণ্ডল জানিয়েছেন, “আমাদের বাড়ি নাই, ঘর নাই। আমাদের যা ছিল সব সংসারের আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।” স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্য়োগে খুলে দেওয়া হয়েছে বৈষ্ণবনগরের পারলাল হাইস্কুল। সেখানেই তৈরি হয়েছে ত্রাণ শিবির। রবিবার দুর্গতদের হাতে ত্রাণ তুলে দেন মালদা সদরের মহকুমাশাসক। এই আবহে গোটা ঘটনার পিছনে তৃণমূলকেই দায়ী করছে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূলের মদতেই ঘটছে এই ঘটনা। এমনকী পানীয় জলে বিষ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।
তবে এই ঘটনাকে লজ্জাজনক হলে মন্তব্য করেছেন শাসক দলের ভরতপুর তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন,’এটা এতবড় লজ্জা। যদি আমাদের জেলা ছেড়ে বা এলাকা ছেড়ে স্থানীয় বাসিন্দার চলে যায়, এর থেকে আমাদের লজ্জার আর কিছু হতে পারে না। আমরা কোনওভাবেই এইরকম বর্বরতাকে মান্যতা দিতে পারি না, পারব না।” অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সকল হিন্দুদের একজোট হওয়ার আরজি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “হে হিন্দু! তোমার সব নিয়ে নিয়েছি আমরা, তোমার সব কেড়ে নিয়েছে। তাই বাঁচতে যদি চাও, হিন্দু তুমি এক হও। ২৬-এ আরও হিন্দুদের সুরক্ষা দেব।”
সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আজ ১৬ই এপ্রিল, বুধবার। আজকের রাশিফল (Ajker Rashifal) অনুযায়ী দিনটি কেমন যাবে?…
সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বর্তমান ব্যস্ত জীবনে অটোমেটিক গাড়ির (Automatic Car) চাহিদা একেবারে আকাশছোঁয়া। ক্লাচের ঝামেলা…
সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বিশ্বের সবথেকে উঁচু বিল্ডিং হিসেবে বুর্জ খলিফাকে (Burj Khalifa) আমরা সবাই চিনি।…
সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এখন তিনি ভারতের সেরা ব্যাটসম্যান। এমনকি বিশ্ব ক্রিকেটে ‘কিং’ হিসাবে পরিচিত। তার…
বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: প্রতিদিন কয়েক কোটি মানুষকে তাঁদের গন্তব্য দেখায় ভারতীয় রেল (Indian Railways)। রেলপথের…
সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এমন একটা সময় ছিল, যখন গ্রামের উন্নয়ন মানেই সরকারি প্রকল্পের উপর ভরসা…
This website uses cookies.