সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: একদিকে চাকরি হারানোর যন্ত্রণা, আর একদিকে হতাশা ও বঞ্চনা, এই দীর্ঘ লড়াই যেন সবকিছুর সীমা পেরিয়ে গেল। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের দাবি জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা এবং চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চ স্পষ্ট করে দিল যে, পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত রাজ্য সরকারকে সময় দিচ্ছে তারা। সময় সীমার মধ্যে যদি সমাধান না মেলে, তাহলে এপ্রিলের ২১ তারিখ আবারো নবান্ন অভিযান করা হবে। হ্যাঁ, এমনটাই হুঁশিয়ারি দিলেন চাকরিহারারা (Teacher Recruitment Scam)।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
এক ছাতার তলায় চাকরিপ্রার্থীদের ১২-১৩টি মঞ্চ
এই চাকরি বঞ্চনার বিরুদ্ধে বহুদিন ধরেই একাধিক সংগঠন আন্দোলন চালাচ্ছে। এবার তারা একত্রিত হয়ে দল গঠন করেছে। এমনকি এবার এক ছাতার নীচে যুক্ত হয়েছে ১২-১৩টি দল। গত বৃহস্পতিবার কলকাতার এক সাংবাদিক বৈঠকে তারা জানায়, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীর উপরে এখনো আস্থা রাখছি। কিন্তু সেই আশা কতদিন থাকবে? সরকার চাইলে সব কিছুই সম্ভব। আমরা শুধু বৈঠক চাই না, বরং সমাধান চাই।”
৭ তারিখের বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন
গত কয়েক মাস ধরেই রাজ্য জুড়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অভিযোগ শিরোনামে। আর সেই অভিযোগের হাত ধরেই মুখ্যমন্ত্রী ৭ই এপ্রিল একটি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন। কিন্তু বৈঠকের স্বচ্ছতা নিয়ে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন তুলছে আন্দোলনকারীরা। একজন শিক্ষক জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রী ঠিকই ডেকেছেন। কিন্তু কাদের নিয়ে তিনি বসতে চাইছেন? আমরা যারা পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি পেয়েছি, তারা কি দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার লোকজনদের সঙ্গে বসবো? যোগ্য আর অযোগ্যদের একসঙ্গে বসানোটা আমাদের জন্য অপমান।”
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
আমরা ভাতা চাই না, চাকরি চাই!
এখানেই থেমে থাকেননি চাকরিহারা প্রার্থীরা। সাংবাদিক বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একজন বলেন, “প্রতিদিন আমরা আতঙ্কে দিন কাটাই। আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি, অথচ সমাধানের কোন রাস্তা খুঁজে পাচ্ছি না। সরকার যেন আমাদের কথা শুনতে চাইছে না। আমরা বেকার ভাতা চাই না, বরং আমরা আমাদের প্রাপ্য চাকরি চাই।” আর এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, আন্দোলনকারীদের দাবি শুধু একটা চাকরি বা আর্থিক সাহায্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তারা চায় ন্যায়বিচার এবং স্বীকৃতি।
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চে সক্রিয় অংশগ্রহণ
চাকরি হারানো বহু প্রার্থীদের এদিন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সঙ্গে জোট বাঁধতে দেখা যায়। উল্লেখ্য এই মঞ্চ দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রীয় হারে ডিএ বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছিল। আর এর ফলে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের আওয়াজ এখন আরো গরম হয়ে উঠেছে। সবথেকে বড় ব্যাপার, রাজ্য সরকারকে এবার ডেডলাইন দিয়ে দিল চাকরিহারারা। পহেলা বৈশাখ পর্যন্তই সময়। আর তারপর নবান্ন অভিযান ও বৃহত্তর আন্দোলন। এখন সরকারের পক্ষ থেকে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেটাই দেখার।