সৌভিক মুখার্জী, কলকাতাঃ প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের এক ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী থাকলো এবার গোটা বিশ্ব। এক যাত্রীবাহী ট্রেন হঠাৎ হাইজ্যাক (Pakistan Train Hijacked) হয়ে যাওয়ার ঘটনা সামনে আসলো এবার। আসলে গতকাল ১০ই মার্চ, সোমবার বেলুচ লিবারেশন আর্মি (BLA) একটি যাত্রীবাহী ট্রেন হাইজ্যাক করেছে বলে দাবি উঠছে। হ্যাঁ, দিনদুপুরে গোটা একটি ট্রেন হাইজ্যাক করে নিয়েছে তারা।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
এই ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে। ‘জাফর এক্সপ্রেস’ নামের এই ট্রেনটি কোয়েটা থেকে পেশোয়ার যাওয়ার পথে হামলার শিকার হয়। হামলাকারীরা ট্রেনের লাইন কার্যত উড়িয়ে দিয়ে ট্রেনটিকে থামিয়ে দেয়। এরপর অস্ত্রসহ নিয়ে ট্রেনে উঠে শত শত যাত্রীকে হোস্টেজ বানিয়ে নেয়।
আসলে কী ঘটেছিল?
সূত্রের খবর অনুযায়ী, জাফর এক্সপ্রেসে ৪০০ এর বেশি যাত্রী ছিল এবং ট্রেনটির কোচ সংখ্যা ছিল ৯। ট্রেনটি যখন পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের বোলান জেলার মুশকাফ এলাকায় পৌঁছায়, তখনই হামলা ঘটে। এই ঘটনা নিয়ে BLA-র মুখপাত্র জিয়ান্দ বেলুচ এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমাদের যোদ্ধারা সফলভাবে ট্রেনটি দখল করেছে। এখনো পর্যন্ত ৬ জন পাকিস্তানী সেনা নিহত হয়েছে এবং শতাধিক যাত্রী এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে। সেনাবাহিনী যদি হস্তক্ষেপ করে তাহলে কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।”
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
হামলার পর পাকিস্তানি প্রশাসনের পদক্ষেপ
এই হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সেনাবাহিনী এবং নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল। পাকিস্তানের বেলুচিস্তান সরকার জরুরি অবস্থার ঘোষণাও করেছে। সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ জানিয়েছেন, “আমাদের সমস্ত প্রশাসনিক বিভাগ বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে। যাত্রীদের নিরাপদে উদ্ধারের জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।”
কেন বারবার বেলুচিস্তানে এমন ঘটনা ঘটছে?
বেলুচিস্তানে বিগত কয়েক দশক ধরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে পাকিস্তানের বাহিনীর লড়াই চলছে। BLA দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীনতার দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। তারা দাবি করছে, পাকিস্তান সরকার বেলুচিস্তানের খনিজ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ শোষণ করে নিচ্ছে। সূত্র বলছে, বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় কিন্তু সবচেয়ে কম জনসংখ্যার শহর। এখানে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তর গভীর সমুদ্র বন্দর গ্বাদার, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই সমস্ত কারণে পাকিস্তানি সেনাদের হস্তক্ষেপের জন্যেই বেলুচিস্তানে এই ঘটনা বারবার ঘটছে।
এই ঘটনাটি আবারও দেখিয়ে দিল, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি কতটা দুর্বল। প্রশাসন এখন জিম্মিদের নিরাপদে মুক্ত করার জন্য কাজ করছে। তবে পরিস্থিতি এখনো উত্তেজনাপূর্ণ। এই ঘটনার ভবিষ্যৎ কি হতে পারে, তা সময়ই বলে দেবে।