সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের বহুদিনের শত্রু এবং নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জৈশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পাকিস্তানে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। পড়শি দেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, পেশোয়ারের পিস্তাখারা এলাকার ক্বারী এজাজ আবিদ (Qari Ejaz Abid) নামের ওই জঙ্গিকে থাকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা কিছু মানুষ গুলি করে হত্যা করে। আর ঘটনায় তার সহকারী ক্বারী শাহিদ গুরুতর আহত হয়েছেন।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
কে ছিলেন ক্বারী এজাজ আবিদ?
ক্বারী এজাজ আবিদ ছিলেন আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত নামের এক কট্টরপন্থী সংগঠনের সদস্য। জানা যাচ্ছে, তিনি আন্তর্জাতিক সংগঠনের খাতমে নবুয়তের প্রাদেশিক নেতা ছিলেন। পুলিশ সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই জৈশ-ই-মোহাম্মদের হয়ে তরুণদের জঙ্গী শিবিরে কৌশল খাটিয়ে যুক্ত করতেন।
তার সঙ্গে ছিল মাওলানা মাসুদ আজহারের এক গভীর সম্পর্ক। তারা একসঙ্গে পড়াশোনা করেছেন। এমনকি বহুবার একই মঞ্চে বক্তৃতাও দিয়েছেন এবং একই দার্শনিক মতবাদ দেওবন্দী চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
তরুণদের কীভাবে জঙ্গি তৈরি করতেন?
আসলে মাসুদ আজহারের এক কৌশল ছিল। সরাসরি নয়, বরং অন্যান্য ধর্মীয় সংগঠনের মাধ্যমে তরুণদের জঙ্গি দলে যোগদান করাতো তারা। আর ক্বারী এজাজ আবিদ সেই পদ্ধতির এক প্রধান কারিগর ছিলেন। জানা যাচ্ছে, প্রথমে তিনি তরুণদের নিজস্ব ধর্মীয় জমায়েতে ডাকতেন। তারপর ধাপে ধাপে তাদের মগজ ধোলাই করে উগ্রপন্থায় নিয়ে যাওয়া হত। আর এরপর তাদের পাঠানো হত জৈশ-ই-মোহাম্মদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। সেখানে অস্ত্র এবং বিস্ফোরক তাদের হাতে তুলে দেওয়া হত এবং পর্যাপ্ত ট্রেনিং করানো হতো।
হামলার ঘটনাটি ঠিক কীভাবে ঘটলো?
পড়শী দেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের পিস্তাখারা এলাকায়। এলাকার পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি মসজিদ থেকে বেরোনোর সময় ইজাজ আবিদের উপর হামলা চালিয়েছিল অজ্ঞাত বন্দুকধারী কিছু দুষ্কৃতি। আর ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারান। তার সঙ্গে থাকা ক্বারী শাহিদ গুলিবদ্ধ অবস্থায় আহত হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলেই খবর।
হামলার পিছনে কে রয়েছে?
যদিও এই হামলাকারীদের এখনো শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। তবে সূত্র বলছে, পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলির মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ক্রমাগত লড়াই লেগেই রয়েছে। আর এও হতে পারে যে, কোন প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী ক্বারী এজাজ আবিদকে সরিয়ে দিতে এই হামলার পথে হেঁটেছে। এবার এমনটাও হতে পারে যে, জৈশ-ই-মোহাম্মদের অন্দরমহলের থেকেই এই হামলা ঘটানো ঘটেছে। তবে ভারতের বহু নিরীহ মানুষের রক্তে হাত রাঙানো এই দুষ্কৃতিকর এহেন অবস্থা স্বস্তির খবর বলেই মনে করছে অনেকে।