সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সম্প্রতি ছত্তিশগড় হাইকোর্ট (High Court) এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। হ্যাঁ, স্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মীর পেনশন, গ্রাচুইটি বা ছুটি নিলে সেই টাকা সরকার ইচ্ছা মত কাটতে পারবে না। এমনকি প্রশাসনের নির্দেশ থাকলেও তা বৈধ হবে না, যদি না সেই কর্মী কোন অপরাধী হিসেবে প্রমাণিত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
কে এই মামলার পিছনে আসল ব্যক্তি?
সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ার বাসিন্দা, রাজকুমার গোনেকার নামের এক প্রাক্তন সরকারি কর্মচারী এই মামলার শিরোনামে উঠে এসেছে। সূত্র বলছে, তিনি ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে অবসর নেন। কিন্তু ২০২৪ সালের ২০ই জুন তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর আগে সরকার তার বিরুদ্ধে এক বড়সড় তছরুপের অভিযোগ তুলে নোটিশ জারি করে। আর তার পেনশন থেকে প্রায় ৯.২৩ লক্ষ টাকা কেটে নেয়।
কী বলল হাইকোর্ট?
এই মামলার রায়ে হাইকোর্টের বিচারপতি বিভু দত্ত গুরু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, গ্র্যাচুইটি এবং পেনশন কোনরকম অনুগ্রহ নয়। এটি একজন কর্মচারীর দীর্ঘ, অবিরাম পরিশ্রমের বিনিময়ে অর্জন করা সম্পদ। এটি এমন একটি অর্থ, যা কোন অপরাধ প্রমান ছাড়া কাটা যায় না।”
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
আর এই পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, এই টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে কোন বিচার বিভাগীয় রায় ছাড়াই। যা সরাসরি ছত্রিশগড় সিভিল সার্ভিসের ১৯৭৬ বিধির পরিপন্থী। আর এই বিধিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, অপরাধ প্রমাণ না হলে কোন কর্মীর পেনশনের টাকা কাটা যাবে না।
আদালতের বক্তব্য
আদালত শুধু এখানেই থেমে থাকেনি। আরো জানিয়েছে, কেবলমাত্র অভিযোগ থাকলে কোন টাকা কেটে নেওয়া যায় না। বরং অপরাধ আদালতে প্রমাণিত হতে হবে। আর একই সঙ্গে সুপ্রিমকোর্টের পুরনো পর্যবেক্ষণকে উদ্ধৃত করে আদালত জানায়, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে পেনশনভোগীকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
এই রায়ের ফলাফল কী?
আদালত গোনেকারের পরিবারকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে নির্দেশ দেয়, অবৈধভাবে কেটে নেওয়া ৯.২৩ লক্ষ টাকা ৪৫ দিনের মধ্যে তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। হ্যাঁ, এই রায় শুধুমাত্র তার পরিবারের জন্য নয়, বরং হাজার হাজার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীর আশার আলো জ্বেলেছে। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে যদি কোন সরকারি কর্মী অপরাধ প্রমাণ না হওয়া অবস্থায় এরকম ধরনের সমস্যায় পড়েন, তাহলে সেও হয়তো এভাবেই রক্ষা পাবেন।