সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ বাংলার মাছপ্রেমীদের কাছে ইলিশ (Ilish) মাছের এক আলাদাই ইমোশনের জায়গা। ইলিশ মাছের নাম উঠলেই সকলের চোখ রীতিমতো জ্বলজ্বল করে। তবে এবছর ইলিশ মাছের স্বাদ সকলে কতটা পাবেন সেই নিয়ে প্রথম থেকেই উঠছে প্রশ্ন। বিশেষ করে বাংলাদেশের ইলিশ এ বছর বাংলায় আদৌ ঢুকবে কিনা সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এসবের মাঝেই ইলিশ মাছ নিয়ে আরও বড় খবর সামনে এল। আপনিও যদি ইলিশ প্রেমী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই প্রতিবেদনটি রইল শুধুমাত্র আপনার জন্য।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
হুড়মুড়িয়ে কমছে ইলিশের উৎপাদন
ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং মায়ানমার সহ ১১টি দেশে পাওয়া যায়। কিন্তু প্রায় ৮৬ শতাংশ কেবল বাংলাদেশেই পাওয়া যায়। মাছ ভক্ষণকারীদের কাছে ইলিশ তার স্বাদের জন্য বিখ্যাত। এর সাংস্কৃতিক গুরুত্বও রয়েছে। এটি বাংলার অনেক ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়। অনেকেই হয়তো জানেন বা অনেকেই হয়তো জানেন না যে আবহাওয়া ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশই উৎপাদন হয় বাংলাদেশে। সামুদ্রিক মাছ হলেও ইলিশ কিন্তু ডিম ছাড়তে স্রোতঃশীল নদীতে আসে। তবে যাইহোক, বিভিন্ন কারণে আর এখন নদীতে ঢুকতে পারছে না রুপোলি শস্য। আর এর জন্য বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের ঘন ঘন আবহাওয়া পরিবর্তন, দূষণকেই দায়ী করেছেন।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
পরিবর্তিত জলবায়ু এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ভুল শোষণের কারণে, সমুদ্রের অনেক প্রজাতির মাছ ক্রমাগত বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বা কিছু বিলুপ্তির পথে। সামুদ্রিক মাছ, বিশেষ করে ইলিশের টেকসই প্রজনন এবং সংরক্ষণ নিশ্চিত করার জন্য আপাতত জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। বাংলাদেশের মৎস্যজীবীরা আর ৫৮ দিনের জন্য বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে পারবেন না। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার উপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা ১১ জুন পর্যন্ত থাকবে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নোনা জলের ইলিশ ডিম পাড়তে নদীর উজান ঠেলে মিঠে জলে উঠে আসে। ডিম ছেড়ে আবার ভাটিতে গা ভাসিয়ে ধরে সাগরের পথ। এজন্য প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত জলপ্রবাহের। বাংলাদেশে বর্ষা মরসুমে অর্থাৎ, জুলাই থেকে অক্টোবরে মেঘনা নদীর নিম্নাঞ্চলের জল স্বচ্ছ হয়ে ওঠে এবং তাতে লবণাক্ততা থাকে না। আবার প্রবল স্রোত ও জোয়ার-ভাটার কারণে ইলিশ সমুদ্র থেকে নদীতে আসতে শুরু করে। পাশাপাশি ইলিশের ডিম ছাড়ার সময় প্রচুর অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। বর্ষায় নদীর জল তুলনামূলক উত্তাল থাকে বেশি। এ সময়ে জলে অক্সিজেনের মাত্রাও বেশি থাকে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
সবথেকে বড় কথা, মাছের ডিম দেওয়ার ক্ষেত্রে জলের তাপমাত্রাও অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সামান্য তারতম্য হলেই মা-ইলিশ ডিম নষ্ট করে ফেলে। যাইহোক, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক হারে দূষণ, জলবায়ুর পরিবর্তনের জেরে ইলিশের বংশবিস্তার থেকে শুরু করে তাঁদের টিকে থাকার জন্য ব্যাপকভাবে লড়াই করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে মাত্রাতিরিক্ত দূষণকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।