সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আমেরিকার ফ্লোরিডায় সম্প্রতি একটি অমানবিক এবং নৃশংস ঘটনা ঘটেছে, যা কিনা পশুপ্রেমীদেরকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। আসলে বিমানবন্দরে ফ্লাইট ধরতে আসা এক নারী শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য নিজের পোষ্য কুকুরটিকে মেরে ফেলেন (Women Killed Dog In Airport), তাও কিনা একেবারে নির্মমভাবে। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। কিন্তু কীভাবে ঘটল এই মর্মান্তিক ঘটনা? আসুন জেনে নেওয়া যাক সম্পূর্ণ ঘটনাটি সম্পর্কে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
ফ্লাইটে ওঠার অনুমতি না পেয়ে কুকুরকে হত্যা
ঘটনাটির সূত্রপাত আমেরিকার ফ্লোরিডের অরল্যান্ডো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এক নারী তার পোষ্য কুকুর নিয়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ধরার জন্য এসেছিলেন। কিন্তু বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মচারীরা তাকে জানান যে, কুকুরটিকে সঙ্গে নিতে হলে বিশেষ অনুমতিপত্র লাগবে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট লাগবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল, ওই নারীর কাছে সেই সমস্ত নথি ছিল না। ফলে কাস্টমস আধিকারিকরা কুকুরটিকে বিমানে নেওয়ার অনুমতি দেননি।
কিন্তু আসল ঘটনাটি এখানেই ঘটে। অনুমতি না দেওয়ার পর মহিলাটি চরম ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তিনি কুকুরটিকে সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দরের বাথরুমে প্রবেশ করেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি কুকুরটি ছাড়াই বাইরে বেরিয়ে আসেন। এরপর তিনি বিমানে উঠে সরাসরি কলম্বিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
কীভাবে ধরা পরল এই ঘটনা?
আসলে ১৬ই ডিসেম্বর বিমানবন্দরের এক পরিচ্ছন্নতা কর্মী বাথরুমের পাশে একটি ডাস্টবিনে কুকুরটির মৃতদেহ দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেই ঘটনাটি বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন। তারপর বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে। বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই নারী কুকুরটিকে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। এমনকি নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। তদন্তে উঠে আসে, ওই নারী ২০ মিনিটের জন্য বাথরুমে ছিলেন এবং তারপর কুকুরটি ছাড়াই তিনি বেরিয়ে এসেছিলেন। বিমানবন্দরে কুকুরটিকে সঙ্গে নিতে না পারায় তিনি তার পোষ্যকে নিজের হাতে নিশংসভাবে হত্যা করেন।
পুলিশের তদন্ত ও গ্রেফতার
পুলিশ জানায় নারীটি ইচ্ছাকৃতভাবেই এই হত্যাকাণ্ড করেছেন। তদন্ত শেষ হওয়ার পর তাকে লেক কাউন্টি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে ৫০০০ ডলার জরিমানা দিয়ে তিনি জামিন মুক্তি পেয়েছেন। এই ঘটনার পরেই বিশ্বের পশুপ্রেমীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে ওই নারীর কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এই ধরনের নিষ্ঠুরতা আর কতদিন?
এই ঘটনায় প্রমাণ করে যে, কিছু মানুষ নিজের স্বার্থের জন্য সবকিছুই বলিদান দিতে পারে। কুকুরটি তার মালিকের কাছে ভালোবাসা আশা করেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে পেল নির্মমভাবে হত্যা। প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে দেশকে আরো কঠোর আইন আনতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে।