সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বাংলাদেশের রাজনীতিতে (Bangladesh Crisis) সাম্প্রতিক সময়ে হাওয়া এমনিই গরম। সম্প্রতি ওপার বাংলায় নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানকে নিয়ে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ দাবি করছেন যে, সেনাপ্রধান নাকি অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে চাননি। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। আর এই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন এবার জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সারজিস আলম।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
সেনাপ্রধানকে কি সরানো হবে?
গতকালের এক সাংবাদিক সম্মেলনে সারজিস আলম স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সেনাপ্রধানকে সরানোর কোনরকম পরিকল্পনা নেই। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “সেনাবাহিনীর প্রধানকে সরানোর কোনরকম প্রশ্ন নেই। বরং এই বিষয়ে মানুষের মধ্যে অহেতুক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। নির্বাচন পর্যন্ত যেন এরকম পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেটাই আমরা চাই। সেনাবাহিনীর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ যেমনটা ছিল, তেমনই থাকবে।”
তিনি এখানেই থেমে থাকেননি। আরো বলেছেন, “সেনাবাহিনী বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, যা জনগণের প্রধান আস্থার জায়গা। রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও সেনাবাহিনীদের ভূমিকা সবসময় গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেনাপ্রধানকে নিয়ে অহেতুক কোন বিতর্ক সৃষ্টি করা দেশের স্বার্থে মোটেই ভালো নয়।”
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
কেন বিতর্কে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান?
গত বছরের ৫ই আগস্ট বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা দেশ ছাড়ার পর সেনাবাহিনী সাময়িকভাবে দেশের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছিল। তখন তারা সামরিক শাসন জারি না করে একটি তৎকালীন সরকার গঠনের পক্ষে ছিল। সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান সেই সময় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দেশের শাসন ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনার কাজ করেছিলেন। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার মধ্যে নতুন বিতর্কে জন্ম দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেছেন, সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান প্রথম থেকেই নাকি মুহাম্মদ ইউনূসকে মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে চাননি। তিনি স্পষ্ট বলেন, “সেনাপ্রধান বলেছিলেন কেন মুহাম্মদ ইউনূস? অন্য কেউ কি ছিল না? ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাহলে তিনি কীভাবে প্রধান উপদেষ্টা হতে পারেন?”
সেনাপ্রধানের আপত্তি এবং রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
আসিফ মাহমুদ আরও দাবি করেন যে, সেনাপ্রধানের মতে আওয়ামী লীগ নাকি মুহাম্মদ ইউনূসকে পছন্দ করেনা এবং দেশের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগের সঙ্গে হাতে হাত মেলায়। আর এই জনগোষ্ঠীর মতামত উপেক্ষা করে মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়িত্ব দেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। সেই ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে হাওয়া আরও গরম হয়। হাসনাত আবদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি তার ফেসবুক পেজে প্রথমে ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন, যা আরো দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে এমনিতেই হওয়া গরম। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে আরো আলোচনা তুঙ্গে। জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সারজিস আলম সেনাবাহিনীর প্রতি এখনও জনগণের আস্থা বজায় রাখতে চাইছেন। যদিও সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে কোনো রকম মন্তব্য করেনি। তবে সামনের দিনগুলিতে এই বিতর্ক রাজনৈতিক মহলে আরো তোলপাড় সৃষ্টি করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।