প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ এবং সেই দুর্নীতিতে মন্ত্রীদের যোগ এবং গ্রেফতারির ঘটনা রীতিমত আলোড়ন ফেলেছে রাজ্যে। শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে রেশন দুর্নীতিতে জর্জরিত গোটা বাংলা। আর এ বার সেই বিষয়ে সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) সরাসরি চিঠি দিলেন এক সরকারি আধিকারিক। আর সেই চিঠিতে উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য। জিটিএ-তে শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও নানা দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে।
আমাদের সাথে যুক্ত হন
Join Now
CID র ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিচারপতি
এর আগে কখনও এমন ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ করে আদালতে চিঠি পাঠানো হয়নি, তাই এমন ঘটনাকে কার্যত বিরল বলেই মনে করছেন সকলে। তাই সেক্ষেত্রে ওই চিঠির বিষয়ে রাজ্য তদন্তকারী সংস্থা অর্থাৎ CID কে তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। বলা হয়েছিল ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে CID কে তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে হবে। কিন্তু জিটিএ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় CID এর রিপোর্ট দেখে রীতিমত ক্ষুব্ধ হলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সঙ্গে প্রশ্ন করা হল রাজ্যের ভূমিকা নিয়েও।
গতকাল অর্থাৎ সোমবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, বিনয় তামাংদের চাইলে ক্লিনচিট দিতে পারে রাজ্য। কিন্তু এদিকে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই নিয়োগে বিন্দুমাত্র কোনও অপরাধ নেই। তবে রয়েছে শুধুমাত্র পদ্ধতিগত ত্রুটি। তাই এই বিষয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্ট চাইছে, যাদের নাম সামনে এসেছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করুক রাজ্য।
আদালত বান্ধব আইনজীবী নিয়োগে জোর বিচারপতির
এদিন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু সেই বেনামি চিঠিটিকে ‘খুব ডেঞ্জারাস’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। এবং সরাসরি রাজ্য সরকারকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিনয় তামাংদের নাম FIR-এ আসার পর তাঁদের সঙ্গে কোনো আইনি আলোচনা করা হয়েছে কিনা। আর সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যই বা কী সেই বিষয়েও জানতে চেয়েছেন বিচারপতি বসু। তিনি মনে করছেন যে এই মামলায় আদালত বান্ধব আইনজীবী নিয়োগ করার খুব প্রয়োজন আছে।
পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে
তবে এদিন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু রাজ্য তদন্তকারী সংস্থা বা CID এর ভূমিকার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়েও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তার কারণ হল FIR-এ নাম থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও নোটিস পাঠানো হয়নি। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বলেন, “ এখনও পর্যন্ত একজনকেও নোটিস পাঠানো হয়নি। বিগ জিরো।” সেক্ষেত্রে এই মামলার শুনানি তিনি আগামী সোমবার ফের পিছিয়েছেন। এবং সেদিন আদালতে CBI-এর সিনিয়র আইনজীবীকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।