বিদ্যুৎ বিক্রি করেই মোটা টাকা আয় করবে রাজ্য, বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার

পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবার নতুন অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে পা বাড়াচ্ছে। বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্প যেমন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী ইত্যাদি প্রকল্পের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় হলেও এতদিন রাজ্য সেভাবে রাজস্ব আদায় করতে পারছিল না- এমনটাই অভিযোগ ছিল বিরোধী শিবিরের। এই প্রেক্ষাপটে আয়ের নতুন রাস্তা খুলতে রাজ্য সরকার বিদ্যুৎ খাতকে কেন্দ্র করে একটি বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করল।

তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধির পরিকল্পনা

সংবাদসূত্রেরখবর অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ সরকার আগামী কয়েক বছরের মধ্যে চার থেকে পাঁচটি নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে। এই প্রকল্পগুলি মূলত পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলে তৈরি করা হবে। এতে সরকারি বিনিয়োগের চাপ কমবে এবং বেসরকারি সংস্থাগুলি বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করবে।

READ MORE:  Password Security: পাসওয়ার্ড চুরি যাওয়ার ভয় নেই, কীভাবে নিরাপদ কীবোর্ড ব্যবহার করবেন | Secure Keyboard

এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি চালু হলে একদিকে যেমন বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে, তেমনই বিদ্যুৎ বিক্রির মাধ্যমে রাজস্ব আয়ও বেশি হবে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলি থেকে বিদ্যুৎ বিক্রি করে বেশি পরিমাণে লাভ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে বিনিয়োগের প্রকল্প

সম্প্রতি কলকাতায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের দেশের শীর্ষ শিল্পপতিরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই সম্মেলনের আগেই পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীতে ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরীর বরাত পেয়েছিল  JFW গোষ্টি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের জন্য জমির বন্দোবস্ত করেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। 

READ MORE:  রেশনে চাল গম পাওয়ার দিন শেষ, এবার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মিলবে ভর্তুকির টাকা

রাজ্যের ভূমিকা

সূত্রের খবর অনুযায়ী, এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ৫ টাকা ৪৫ পয়সা প্রতি ইউনিট দামে কিনবে রাজ্য সরকার। এছাড়াও বক্রেশ্বর, দুর্গাপুর এবং সাঁওতালদিঘিতে আরো কয়েকটি বড় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম (WBPDCL) সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, প্রতিটি বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট পাবলিক প্রাইভেট মডেলেই তৈরি করা হবে। সরকারের ভূমিকা থাকবে মূলত জমি, কয়লা হ্যান্ডেলিং, প্লান্ট এবং অন্যান্য পরিকাঠামো সরবরাহের জন্য। বেসরকারি সংস্থাগুলি এখানে বিনিয়োগের দায়িত্ব নেবে। 

রাজস্ব ভাগাভাগির নতুন ব্যবস্থা

এই প্রকল্পগুলির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল রাজ্য সরকার সরাসরি বিদ্যুৎ এখান থেকে কিনবে না। বদলে এখানে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা বিদ্যুৎ বিক্রি করে লাভবান হবে এবং সেই লাভের একটি নির্দিষ্ট অংশ সরকারের সঙ্গে ভাগ করে নেবে। এর জন্য ‘Revenue Sharing Agreement’ বা রাজস্ব ভাগাভাগির চুক্তি করা হবে।

READ MORE:  WBP Recruitment 2025: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে চাকরির সুবর্ণ সুযোগ, অজস্র পদ নিয়োগ, রাজ্যের সব জেলা থেকেই আবেদন | West Bengal Police Recruitment

এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ন হলে রাজ্যের বিদ্যুৎ সরবরাহে অনেকটাই স্থায়িত্ব আসবে এবং বিদ্যুৎ বিক্রির মাধ্যমে ভালো পরিমাণে রাজস্ব আয় করা সম্ভব হবে। অর্থনৈতিক দিক সচল রাখতে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে এটি বড় ভূমিকা রাখবে। রাজ্যের উন্নয়নে এই পদক্ষেপ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলেই আশা করছে বিশেষজ্ঞরা।

Scroll to Top