রাজ্য সরকারের চালু করা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প স্বাস্থ্য সাথী (Swastha Sathi)। এবার এই প্রকল্প ও ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ স্কিম একসঙ্গে মিলে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল। এই প্রকল্পের সঠিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে এবার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলিকে স্বীকৃতি জানাতে এগিয়ে এলো স্বাস্থ্য কমিশন।
গত সোমবার রাজ্যে ৪৭টি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে এক বৈঠক হয়। উল্লেখিত বৈঠকে স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম বন্দোপাধ্যায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছিলেন। তার মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য ঘোষণাগুলি হল-
- হাসপাতালগুলিকে স্বাস্থ্য সাথী এবং হেলথ স্কিমের চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- সঠিক পরিষেবা প্রদানকারী হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য সংস্থাগুলিকে পুরস্কার দেওয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
- ওষুধ, পরীক্ষা এবং চিকিৎসা সামগ্রির খরচ পুনর্বিবেচনার নির্দেশে দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে কেমন পরিষেবা মিলছে?
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকেই সাধারণ মানুষের জন্য এটি একটি বড় ভরসা। এই প্রকল্পের আওতায় গ্রাম থেকে গ্রামাঞ্চল বা শহর, বহু মানুষ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা পেয়ে থাকেন।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রকম অভিযোগ উঠেছে। যেমন সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল এই প্রকল্পের সুবিধা দিচ্ছে না। কোন কোন ক্ষেত্রে চিকিৎসার খরচ বেশি নেওয়া হচ্ছে। আবার ওষুধ ও পরীক্ষার খরচ নিয়েও সমস্যা রয়েছে।
আর এই সমস্ত সমস্যাকে সমাধান করতেই কমিশন এবার সরাসরি হাসপাতালগুলির কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় চিকিৎসা সুবিধার হিসাব
উল্লিখিত বৈঠকে স্বাস্থ্য কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, গত ৩ বছরে স্বাস্থ্যসাথী এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ স্কিমের আওতায় কতজন রোগী চিকিৎসার সুবিধা পেয়েছেন তার সমস্ত তথ্য জমা দিতে হবে।
পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে তাদের মোট শয্যাসংখ্যার নিরিখে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় রোগীদের জন্য কতটা সুবিধা বরাদ্দ করা হয়েছে তাও জানাতে হবে। আর এই তথ্য বিশ্লেষণ করে হাসপাতালগুলির পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করা হবে।
আগেও দেওয়া হয়েছিল নির্দেশ
এর আগেও স্বাস্থ্য কমিশনের তরফ থেকে এরকম নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যে সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের অংশ হয়েছে, তাদের মোট শয্যাসংখ্যার অন্তত ১০% স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় রোগীদের জন্য বরাদ্দ করে রাখতে হবে। কিন্তু বাস্তবে সেই হাসপাতালগুলি এই নিয়ম মেনে চলছে কিনা তা এবার দেখতে চায় কমিশন।
এক কথায় স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প এখন রাজ্যের লাখ লাখ মানুষের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ এক প্রকল্প। তবে এই প্রকল্পের আরো স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং যাতে সবাই উপকৃত হয়, তা নিশ্চিত করতে সরকার আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।