তিনি ভারতীয় সঙ্গীতের কিংবদন্তি, তিনি মহা গায়িকা। তাঁর গান অনুপ্রেরণা ভারতবর্ষের সমস্ত গায়ক-গায়িকা থেকে শুরু করে সঙ্গীতপ্রেমী মানুষের। নিজের গানে ভারতীয় সিনেমাকে সমৃদ্ধ করেছিলেন তিনি। আজও বিশ্বজুড়ে তাঁর গুণমুগ্ধের সংখ্যা অগুনতি। ভারতবর্ষের সঙ্গীত দুনিয়ায় তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। একাধিক জাতীয় পুরস্কার, পদ্মভূষণ, দাদা সাহেব ফালকে, ভারত রত্ন সম্মানে তিনি সম্মানিত।
বলাই বাহুল্য, তাঁর কণ্ঠে স্বয়ং বাস ছিল মা সরস্বতী’র। এহেন সঙ্গীত শিল্পীই ২০২২ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজোর বিজয়ার দিন প্রয়াত হন। ভারতীয় সঙ্গীত দুনিয়ায় তার জায়গা নেওয়ার ক্ষমতা কারর হয়নি। ভবিষ্যতেও তার জায়গা নেওয়ার ক্ষমতা কাররই হবে না। একটা সময় পর অবশ্য লতা মঙ্গেশকর গান গাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন, তবুও তাঁর প্রতি শ্রোতাদের এবং পরিচালকদের আকর্ষণ কখনও কমেনি। সব পরিচালক চাইতেন তার ছবিতে যেন একবার গান গান লতা মঙ্গেশকর।
উল্লেখ্য, যাঁর গাওয়া প্রেমের গান প্রেমিক-প্রেমিকারা একে অপরকে উৎসর্গ করতেন সেই গায়িকাই কেন গোটা জীবন কেন অবিবাহিত রইলেন? কেন বিয়ে করেননি লতা মঙ্গেশকর? জানা যায়, মহাগায়িকার জীবনেও নাকি প্রেম এসেছিল। তবে সেই প্রেম পূর্ণতা পায়নি কোনদিন। জানা যায় ডুঙ্গারপুর রাজপরিবারের মহারাজা রাজ সিংকে ভালোবেসেছিলেন লতা মঙ্গেশকর।
কিন্তু মহারাজা রাজ সিং নিজের পিতা- মাতার কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন যে কোনও সাধারণ পরিবারের মেয়েকে তিনি রাজ পরিবারের পুত্রবধূ করবেন না। সেই সে প্রতিজ্ঞা আমৃত্যু পালন করেন রাজ সিং। তবে লতাকেও তিনি মন থেকে ভালোবাসতেন। আর তাই অবিবাহিত ছিলেন তিনিও। রাজকে ছাড়া অন্য কাউকে ভালোবাসার কথা কল্পনাও করেননি লতা মঙ্গেশকরও। জানা যায়, রাজের নাম করে সিঁথিতে সিঁদুরও পরতেন তিনি। একইসঙ্গে জানা যায়, রাজ নাকি সদা নিজের সঙ্গে লতাজির গাওয়া গান একটি টেপ রেকর্ডারে রাখতেন। সময় পেলেই সেই গান শুনতেন। ২০১৯-এ প্রয়াত হন রাজ সিং। উল্লেখ্য, ডুঙ্গারপুরের রাজা ছাড়া অন্য কারোর সঙ্গেই কোনদিনও নাম জড়ায়নি লতা মঙ্গেশকরের। এ এক অসম্পূর্ণ প্রেম গাঁথা।