প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতির ঘটনা প্রায়ই উঠে আসছে খবরের পাতাতে। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে কয়লা পাচার, গরু পাচার ইত্যাদি নানা ঘটনায় জেল খাটতে হয়েছে রাজ্যের হেভিওয়েট নেতাদের। আর এই দুর্নীতির মধ্যে অন্যতম হল রেশন (Ration) দুর্নীতি। যার জন্য প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককেও জেল খাটতে হয়েছিল। তবে মন্ত্রী ছাড়াও প্রায়শই ডিলারদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ শোনা যায়। যদিও এর আগে রেশনে কারচুপি ঠেকাতে একাধিক ব্যবস্থা করেছে খাদ্য দফতর। তবে এবার এই অনিয়ম রুখতে আরও তৎপর হয়েছে প্রশাসন। নিয়ম না মানায় ডিলারদের হাতে ধরানো হল শোকজের নোটিশ।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
শোকজের নোটিশ ১২০ জন ডিলারকে!
সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, রেশন গ্রাহকদের রেশনের খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার সময় ওজন মেশিনের সঙ্গে ই পস যন্ত্র সংযুক্ত রাখা বাধ্যতামূলক। কারণ একজন রেশন ডিলার সঠিক পরিমাণ চাল, ডাল ইত্যাদি সামগ্রী দিয়ে টাকা নিচ্ছেন কি না, সেটা ওই মেশিনে দেখা যায়। এবং এই মেশিনের কারণে অনেক গ্রাহক নানা সুবিধা পেয়ে থাকে। কিন্তু এই নির্দেশ অমান্য করেছে বেশ কিছু রেশন ডিলার। তাই তাঁদেরকে এবার শোকজ করা হল। সূত্রের খবর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা খাদ্য বিভাগের তরফে প্রায় ১২০ জনের বেশি রেশন ডিলারকে শোকজ করা হয়েছে।
কেন এই সিদ্ধান্ত খাদ্য দফতরের?
সম্প্রতি রেশন সামগ্রী ঠিকভাবে গ্রাহকদের দেওয়া হচ্ছে কিনা তা পরিদর্শন করতে খাদ্য দফতরের কয়েকজন আধিকারিক বিভিন্ন রেশন দোকানে সমীক্ষা চালাচ্ছিল। ঠিক সেই সময় রেশন ডিলারদের এই অপকর্ম তাঁদের নজরে আসে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, রেশন সামগ্রী মাপার ওজন মেশিনের সঙ্গে ই-পস যন্ত্র যুক্ত না করেই তাঁরা গ্রাহকদের খাদ্য সামগ্রী দিচ্ছেন। সেই ব্যাপারে প্রথমে ডিলারদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল খাদ্য বিভাগের আধিকারিকদের তরফে। কিন্তু, ডিলাররা ই-পস যন্ত্র ব্যবহার না করার যে জবাব দিয়েছিলেন, তাতে একদমই সন্তুষ্ট হতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। তারপরেই এই শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
প্রসঙ্গত, লাগাতার রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে রেশন সামগ্রী কারচুপির অভিযোগ ওঠায় এবং রাজ্যে রেশনে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসার পরেই প্রকল্পের স্বচ্ছতা এবং গানম্যান বজায় রাখতে খাদ্য দফতরের তরফে সমস্ত ডিলারদের ওজন মাপার যন্ত্রের সঙ্গে ই-পস সংযুক্ত বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। এর ফলে একজন ডিলার সঠিক পরিমাণে চাল, ডাল প্রভৃতি সামগ্রী দিয়ে টাকা নিচ্ছেন কিনা, তা সবই মেশিনে দেখা যায়। তবে অনেক ডিলার অনিয়ম করছেন। তাই এবার তাঁদের শোকজ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে এই সপ্তাহ থেকে এর শুনানি হবে। হতে পারে ডিলারদের লাইসেন্স বাতিল। অন্যদিকে খাদ্যসামগ্রীর হিসেবে গরমিলের অভিযোগে ডায়মন্ডহারবার মহকুমার দু’জন রেশন ডিস্ট্রিবিউটারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।