সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের প্রতিটি রাজ্যেরই সংস্কৃতি, পরিবেশ এবং জীবনধারা ভিন্ন ভিন্ন। বৈচিত্র্যময় এই দেশের কোথাও মানুষ খুশিতে (Happiest State) জীবন কাটায়, আবার কোথাও রয়ে গিয়েছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক খরা। সম্প্রতি এক রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা গিয়েছে, ভারতের সবচেয়ে সুখী দশটি রাজ্যের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছে হিমাচল প্রদেশ। অন্যদিকে সবথেকে অখুশি রাজ্য হিসেবে উঠেছে যোগীর রাজ্যের নাম।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
কীভাবে তৈরি হয়েছে এই সুখী রাজ্যের তালিকা?
এই রিপোর্টে মূলত রাজ্যগুলিকে কয়েকটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়েছে। মানুষের জীবন নিয়ে সন্তুষ্টি, মানসিক স্বাধীনতা, সামাজিক সহায়তা, নিজের পছন্দের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা, উদারতা ইত্যাদি বিষয়ের উপর দৃষ্টিভঙ্গি রেখেই তৈরি করা হয়েছে এই তালিকা। সবমিলিয়ে কোন রাজ্যের মানুষ কতটা সুখী, তা নির্ধারণ করছে এই সূচকগুলির উপরেই।
ভারতের সবচেয়ে সুখী রাজ্য হিমাচল প্রদেশ!
তালিকার শীর্ষে রয়েছে হিমাচল প্রদেশ। পাহাড়ের শান্ত পরিবেশ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর এখানকার মানুষের মেলবন্ধন, হিমাচলবাসীদের জীবনে নিয়ে এসেছে মানসিক শান্তি। ব্যস্ত শহরের কোলাহল থেকে অনেকটা দূরে শহরের মানুষজন প্রকৃতির সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করেন। তাই এই রাজ্যটি সুখী রাজ্যের তালিকায় একদম প্রথম স্থানে দখল করে ফেলেছে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
একনজরে সুখী রাজ্যগুলির তালিকা
আমরা প্রথমেই আলোচনা করলাম এই তালিকার একদম শীর্ষ রয়েছে হিমাচল প্রদেশ। যেখানকার পাহাড়, প্রকৃতি এবং শান্ত জীবনযাত্রা রাজ্যটিকে একদম প্রথম স্থানে নিয়ে গিয়েছে। তো দেখে নিন, একনজরে বাকি রাজ্যগুলোর তালিকা।
মিজোরাম– সমাজের মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং উচ্চ শিক্ষার হার এই রাজ্যটির সুখের পিছনে সবথেকে বড় অবদান রাখে।
পাঞ্জাব– এই রাজ্যের সংস্কৃতি, কৃষিভিত্তিক সাফল্য এবং খাদ্যপ্রেমী সমাজ রাজ্যটিকে আনন্দে পরিপূর্ণ করে তুলেছে।
গুজরাট– অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধ এবং এখানকার সম্প্রদায়ের সংহতি এই রাজ্যটিকে আরো বেশি সুখী করে তুলেছে।
সিকিম– সবুজে ঘেরা পাহাড়ি নৈসর্গিক রাজ্য হিসেবে পরিচিত সিকিম, যেখানে প্রকৃতি এবং মানসিক শান্তি একসঙ্গে মানুষের নজর কারে।
অরুণাচল প্রদেশ– উপজাতি সংস্কৃতির বৈচিত্র এবং প্রাকৃতিক বনাঞ্চল দিয়ে এই রাজ্যটি তৈরি হয়েছে নিরিবিলি মানসিক শান্তির জায়গা।
কেরালা- উচ্চশিক্ষার হার, স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং প্রকৃতির আশীর্বাদ যেন কেরালাকে এক নৈসর্গিক রাজ্যে পরিণত করেছে।
মেঘালয়- রিমঝিম ঝরনার শব্দ, শিল্পকল্পের নিপুণতা আর সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা, এই রাজ্যটিকেও সুখী রাজ্যের কাতারে শীর্ষ দশে স্থান দিয়েছে।
উত্তরাখণ্ড- মানুষের মধ্যে আধ্যাত্মিকতা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাদামাটা জীবন এই রাজ্যটিকে সুখের চাদরে ঘিরে রেখেছে।
চন্ডিগড়- পরিকল্পিত শহর, উন্নত পরিষেবা এবং শহরবাসীর নিরাপত্তা এই রাজ্যটিকে আনন্দে ঘিরে রাখে।
উত্তরপ্রদেশ কেন তলানিতে?
এই সমীক্ষায় উঠে এসেছে এক চমক দেওয়া তথ্য। উত্তরপ্রদেশের মানুষ নাকি এখনো দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করেন। হ্যাঁ, একদম ঠিকই পড়েছেন। স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার সুযোগ অনেকাংশই এখানে সীমিত। যার ফলে মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব তৈরি হয়। এছাড়া এই রাজ্যে লিঙ্গ বৈষম্য সবথেকে বড় সমস্যা। নারীরা এখনো অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে। আর এইসব মিলিয়েই রাজ্যটি ভারতের সবচেয়ে অখুশি রাজ্যের তকমা পেয়েছে।