জমি সংক্রান্ত জালিয়াতি (Land Trading) , ভুয়ো দলিল, মালিকানার বিতর্ক এই সমস্যাগুলি ভারতে নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এবার সেই জটিল পরিস্থিতি সমাধান করতে বড়সড় পদক্ষেপ নিয়েছে। ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ থেকে সারা দেশে কার্যকর হচ্ছে জমি রেজিস্ট্রির নতুন ডিজিটাল আইন।
এবার শুধুমাত্র কাগজে-কলমে নয়, বরং বাস্তবেও পরিবর্তন আনতে চলেছে ভারতের জমি নিবন্ধন ব্যবস্থা। কিন্তু কী কী থাকছে এই নিয়মে? আর কেনই বা এই নিয়ম আলোচনায় উঠে এসেছে? জানতে হলে প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
নতুন নিয়মে কী কী থাকছে?
এখনো পর্যন্ত বিভিন্ন সূত্র মারফত যা জানা যাচ্ছে, নতুন নিয়মে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল-
আধার ভিত্তিক ডকুমেন্ট সাবমিশন
জমি বিক্রেতা এবং ক্রেতা, উভয়ের এবার আধার নাম্বার অনুযায়ী নথিপত্র জমা দিতে হবে। আর এতে মালিকানা যাচাই আরও নির্ভুলভাবে সম্পন্ন হবে।
ডিজিটাল দলিল এবং অনলাইন সাবমিশন
বিক্রয়, চুক্তি বা অন্যান্য ডকুমেন্টে এবার থেকে কেবলমাত্র অনলাইনের মাধ্যমে জমা নেওয়া হবে।
বায়োমেট্রিক যাচাই
সাব রেজিস্টার অফিসে গিয়ে এবার বায়োমেট্রিক রেকর্ড করাতে হবে। আর এতে নকল পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হবে এবং রেজিস্ট্রির সম্ভাবনা একেবারে কমে যাবে।
GIS ভিত্তিক ভূমি ম্যাপিং
সীমানার নির্ভুলতার জন্য এবার থেকে সম্পত্তির স্থানাঙ্ক নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে GIS ম্যাপিং ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে।
দ্রুত রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এবার জমি রেজিস্ট্রেশনের কাজ শেষ করতে হবে সর্বোচ্চ ১০ কর্মদিবসের মধ্যে।
ব্লক চেইন প্রযুক্তি
ভবিষ্যতে কোনো পরিবর্তন বা ভুয়ো এন্ট্রি ঠেকাতে এবার নির্দিষ্ট কিছু রাজ্যে ব্লক চেইনভিত্তিক ডিজিটাল ভূমি রেকর্ড চালু করছে।
এই নয়া নিয়মের পিছনে আসল যুক্তি কী?
অনেক সময় দেখা যায় যে, একটি জমির মালিকানা নিয়ে একাধিক পক্ষ দাবি করে। আর কোথাও দেখে যায় দলিল জাল অথবা কোথাও জমির সীমানা অস্পষ্ট। আর এই ধরনের সমস্যাগুলিকে রোধ করতে নতুন ডিজিটাল নিয়ম চালু করে সরকারি আরও একধাপ এগিয়ে যেতে চাইছে।
কোন ডকুমেন্টগুলি লাগবে রেজিস্ট্রির সময়?
এবার থেকে জমির রেজিস্ট্রির সময় সে ডকুমেন্টগুলি প্রয়োজন হবে সেগুলি হল- আধার কার্ড, বিক্রয়ের চুক্তিপত্র, ট্যাক্সের রশিদ, অনলাইন সাবমিশনের প্রিন্ট, GIS ম্যাপের কপি এবং সাব রেজিস্টার অফিসের বায়োমেট্রিক রেকর্ড।
সরকারের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে সেরা সিদ্ধান্ত। শুধুমাত্র ডিজিটালাইজেশন নয়, বরং এটি দেশের সম্পত্তি ব্যবস্থায় নতুন বিশ্বাসযোগ্যতারও সূচনা করতে চলেছে। তাই যদি জমি কেনাবেচার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে অবশ্যই নিয়মগুলি মাথায় রাখুন।