প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গরমকালে প্রখর রোদে তৃষ্ণা নিবারণ করতে অনেকেই রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পুদিনার সরবত, লেবুর সরবত এবং গোলা খেয়ে থাকে। একমুহূর্তে তৃপ্তির চুমুক দিতেই মন এবং আত্মা যেন শান্তি পাচ্ছি। যদিও সবটাই এই বরফের সৌজন্যেই। কিন্তু জানেন কি এই বরফগুলো আসলে মৃতদেহ সংরক্ষণ, মাছ-সবজির সংরক্ষণে ব্যবহৃত ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইস’৷ তাই এবার সেই নিয়ে তদন্ত অভিযানে নামল কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
ঘটনাটি কী?
গতকাল, পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকরা রাস্তার ধারে আশেপাশের ছোট ছোট পানীয়ের দোকান, লেবুর জলের দোকানে এবং বরফ গোলার দোকানে অভিযান চালায়। এসপ্ল্যানেড, নিউ মার্কেট, বিধান মার্কেট, কলকাতা প্রেস ক্লাব চত্বর থেকে বরফ উদ্ধার করে তা সঙ্গে সঙ্গেই নষ্ট করে দেন স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকেরা। সতর্ক করে দেওয়া হয় বিক্রেতাদের। আসলে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে অভিযোগ উঠছে যে মর্গে মৃতদেহ সংরক্ষণে ব্যবহৃত বরফ এমনকি মাছ-সবজির সংরক্ষণে ব্যবহৃত ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইস’-এর বাড়বাড়ন্ত শহরজুড়ে৷ তাই এবার ময়দানে নামল কলকাতা পুরসভা।
সতর্কবার্তা বিক্রেতাদের
পুরসভার তরফে জানা গিয়েছে যে বরফ বিক্রেতারা পানীয়ে ব্যবহার করছেন, তা আসলে মর্গে মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়। তাই সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তায় নেমে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে পুরসভা। এদিন অভিযানে নেমে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা বিক্রেতাদের সতর্ক করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, দোকানে সবসময় কিউব বরফ ছাড়া আর কোনও ধরনের বরফের ব্যবহার তাঁরা করতে পারবেন না। এরপরেও আগামী দিনে কেউ যদি এহেন কাজ আবার করে তাহলে তাঁরা শাস্তি পাবে। গোটা গ্রীষ্মকাল জুড়েই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এই ধরনের অভিযান চলবে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে, ‘‘গ্রীষ্মকালে কলকাতা শহরে প্রবল গরম পড়ে। তাই রাস্তায় বেরিয়ে অনেকেই ঠান্ডার অনুভূতি পেতে আইসক্রিম, বরফগোলা কিংবা শরবত খান। এদিকে এসবের সুযোগ নিতে এবং বাড়তি টাকা উপার্জনের লোভে, ঠান্ডা পানীয়ে ব্যবহৃত বরফের অধিকাংশ অপরিশোধিত জল দিয়ে অথবা মর্গ এর বরফ দিয়ে তৈরি। তাই পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ হানা দিয়ে এই অসৎ কাজ বন্ধ করার জন্য মাঠে নেমেছে।
যদিও এটাই প্রথমবার নয়। এর আগেও বহুবার পুরসভার অভিযানে এ ছবি ধরা পড়েছে। সরবত বিক্রেতাদের সতর্কও করা হয়েছিল। কিন্তু সে কথা কে আর কানে তুলেছে। এর আগে আইনের হুমকিও দিয়েছিল পুরসভা। মুখের কথায় যে কাজ হবে না তা বেশ বুঝেছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। কিন্তু এবারেও যে তাঁদের নির্দেশ কার্যকর হবে তা নিয়ে যথেষ্ট জল্পনা শুরু হয়েছে।