সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: শনিবার দুপুরের ঘটনা। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (PoK) মুজাফ্ফরাবাদে হঠাৎই ছড়িয়ে পড়ল আতঙ্ক। সূত্রের খবর, সাধারণত যেখানে মসজিদ থেকে ভেসে আসে আজানের শান্ত সুর, সেখানে গতকাল ভিন্ন চিত্র দেখা গিয়েছে। হ্যাঁ, লাউডস্পিকারে ঘোষণা হয়েছে, “ঝিলাম নদীর জলস্তর বাড়ছে। সবাই নিরাপদ স্থানে সরে যান।”
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
হঠাৎ কী এমন ঘটল?
বেশ কিছু সূত্র বলছে, ঝিলাম নদীর জল আচমকাই বেড়ে যায়। আর নদী তীরবর্তী এলাকায় চকোঠি সীমান্ত থেকে মুজাফ্ফরাবাদ পর্যন্ত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা অভিযোগ তুলছে, আগে থেকে কোনরকম ঘোষণা ছাড়াই ভারতের দিক থেকে জল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কার্যত হুমকির কবলে পড়েছে গোটা অঞ্চল।
কেন এমন ঘটনা ঘটলো?
আসলে সপ্তাহের শুরুতেই পহেলগাঁওয়ে ঘটে নৃশংস জঙ্গি হামলার ঘটনা। এর জেরে প্রাণ যায় ২৬ জন পর্যটকের। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন অবস্থা। পাকিস্তান অভিযোগ তুলছে, ভারতের এই জল ছেড়ে দেওয়ার পদক্ষেপ সিন্ধু জলচুক্তি বাতিলের ইঙ্গিত। এমনকি ভারতের দিক থেকে কোনরকম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই জল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
মুজাফ্ফরাবাদের পরিস্থিতি দেখতে নিয়ে প্রশাসনরা নিশ্চিত করছে, নদীর জলস্তর আচমকাই অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছে। আর এর জোরে হাট্টিয়ান বালা অঞ্চলকে জল সংকটের জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
রাত কেটেছে আতঙ্কের মধ্য দিয়ে
সূত্রের খবর, চকোঠি, গাড়ি দুপট্টা, মাজহোই এবং মুজাফ্ফরাবাদের স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে রাত কাটিয়েছে। হ্যাঁ, ঝিলাম নদীর রূপ দেখে অনেকেই ভয়ে থরথর করে কাঁপছে। মসজিদগুলিতে ঘন ঘন মাইকের সতর্কবার্তা শোনা যাচ্ছে, “ঝেলাম নদীর ধার থেকে সরে যান। উঁচু জায়গায় চলে যান।”
একজন বাসিন্দা বলেছেন, ঘোষণাগুলি শুনে মনে হচ্ছিল পরিস্থিতি ভয়ংকর হতে চলেছে। নদীর জল একেবারে তরতর করে বাড়ছিল। লোকজন এরপর ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছে। এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক জানিয়েছে, এই ঘটনা আপত্যাশিত হলেও পরিস্থিতি এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। সিন্ধু জলচুক্তি বাতিলের ইঙ্গিত ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আগেভাগেই জানানো হয়েছে।
বাড়ছে উত্তেজনা
এদিকে বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছে, ভারতের এই পদক্ষেপ ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ককে আরও সাপে-নেউলের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, সিন্ধু জলচুক্তি তিনটি যুদ্ধ এবং বহু ভূখণ্ড সংক্রান্ত আন্দোলনের মধ্যে দিয়েও কোনরকম ভাবে টিকে ছিল। আর ভারতের পক্ষ থেকে তা ছেড়ে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এখন দেখার এই উত্তেজনার ঢেউ কতদূর গড়াবে।