প্রীতি পোদ্দার, ফালাকাটা: অবশেষে শেষ হল ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam 2025)। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে পরীক্ষার্থীরা। যদিও ঐচ্ছিক বিষয়ের পরীক্ষা এখনও বাকি। কিন্তু এদিন মাধ্যমিক পরীক্ষার শেষ দিনে যখন সারা রাজ্যে পরীক্ষার্থীদের বাঁধনছাড়া উল্লাস দেখা যাচ্ছিল, সেখানে আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার জটেশ্বরে দোল উৎসব পালন করতে দেখা গেল পরীক্ষার্থীদের। তবে পার্থক্য শুধু রঙ এবং আবিরের। পরীক্ষার হল থেকে বেরিয়ে বই ছিঁড়ে ফেলল পরীক্ষার্থীরা। স্তম্ভিত শিক্ষক মহল থেকে শুরু করে অভিভাবকরা।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
ঘটনাটি কী?
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মাধ্যমিকের অন্তিম পরীক্ষা ছিল ভৌতবিজ্ঞান। নির্দিষ্ট সময় পর ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষা শেষে জটেশ্বর উচ্চবিদ্যালয় ও জটেশ্বর গার্লস হাইস্কুলের পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসে পরীক্ষার্থীরা। কিন্তু পরীক্ষা শেষে আনন্দের চিত্র যেন হঠাৎ করেই রূপান্তরিত হয় মহা উল্লাসে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিজেদের সঙ্গে থাকা বই-খাতা কুটি কুটি করে ছিঁড়ে ফেলে তারা। ছেঁড়া পাতার টুকরোয় ঢেকে যায় জটেশ্বরের ১৭/ডি জাতীয় সড়ক। পরীক্ষার্থীরা এতটাই লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে যে, কোনো অভিভাবক বা কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা থতমত খেয়ে যান। শেষে সম্বিত ফিরে আসলে পুলিশ চোখ পাকালে এলাকা ছাড়ে পরীক্ষার্থীরা।
সমালোচনায় মুখরিত স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকারা
এই প্রসঙ্গে জটেশ্বর গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সোমা দে-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি কোনো সাড়া দেননি। এদিকে ওই পরীক্ষার্থীরা কোন স্কুলের ছাত্রছাত্রী ছিল তা নিয়ে ধন্দ থেকেই যাচ্ছে। অন্যদিকে জটেশ্বরের এক অভিভাবক বলেন, ‘প্রথমে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ভাবছিলাম মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা এটা কী করছে? লজ্জাই লাগছিল এ সব দেখে।’ সমালোচনা করতে ছাড়েনি বাকি স্কুলগুলিও।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
আলিপুরদুয়ার এক নম্বর ব্লকের ঠাকুর পঞ্চানন উচ্চবিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক জয়ন্ত সরকার বলেন, ‘এটা এক ধরনের সামাজিক অবক্ষয়। ছাত্র সমাজের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। নইলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’ এমনকি এই ঘটনায় জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আহসানুল করিমও নিন্দা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘উদযাপনের সীমা শেখাতে আমরাই হয়ত কোথাও ব্যর্থ হয়েছি। সুতরাং এই ব্যর্থতা শুধু তাদের নয় আমাদের সবার। আমরাই ব্যস্ততার মাঝে সময় করে ওদের ভালোবাসা আর শৃঙ্খলা শেখাতে পারিনি।’