সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ডিএ মামলা (DA Case) নিয়ে বিতর্ক এখন তোলপাড়। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলাটি বর্তমানে শেষ পর্যায়ে থাকলেও নতুন বিতর্ক দানা বাধছে। আর এই বিতর্ক মূলত সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলির মধ্যেই দেখা যাচ্ছে। এমনকি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ সুপ্রিম কোর্টের ডিএ মামলায় যুক্ত হওয়ার আবেদনও জানিয়েছে। কিন্তু কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ এই অনুরোধের কড়া বিরোধিতা করেছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
ডিএ মামলায় নতুন বিতর্ক
হিন্দুস্থান টাইমসের প্রতিবেদন মারফত জানা গিয়েছে, কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেছেন, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে করা আবেদনপত্রে বেশ কিছু ভুল দেখা গিয়েছে। তিনি দাবি করেন, “যে ব্যক্তি মামলায় যুক্ত হতে চেয়েছেন, তিনি নিজের দপ্তরের ঠিকানাই ঠিকভাবে দেয়নি। শিক্ষকতার পেশার কথাও তিনি উল্লেখ করেননি। তাহলে এত ভুল কেন? এটা কি মামলা দীর্ঘ করার কোনরকম চক্রান্ত?
আর এরকম পরিস্থিতিতেই প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই কি ডিএ মামলাকে দীর্ঘ করার চেষ্টা চলছে? নাকি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ নিজেদের দাবিদাওয়াগুলি সুপ্রিম কোর্টে তুলে ধরতে চাইছে?
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
কনফেডারেশনের বক্তব্য
তবে এই মামলা নিয়ে কনফেডারেশন মনে করছে, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের যুক্ত হওয়ার ফলে আদালতে নতুন করে তাদের যুক্তি আবারও শোনা হবে। যার কারণে মামলার শুনানি আরো কিছুদিন পিছিয়ে যেতে পারে। মনে করা হচ্ছে, রাজ্য সরকার নতুন করে সময় চাইতে পারে। ফলে মামলার রায় আসতে আরো দেরি হবে। ফলে সরকারি কর্মচারীরা আরো বিপদে পড়বে। তারা দাবি করছে, ডিএ মামলা এখন শেষ পর্যায়ে। তাই নতুন করে কোন পক্ষ যুক্ত হতে পারবে না। এতে প্রত্যক্ষভাবে কর্মচারীদের কোন লাভ হবে না।
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পাল্টা বক্তব্য
তবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি দাবি করছেন, “আমরা বরাবর রাস্তায় লড়াই করেছি। আদালতের লড়াইয়ের দায়িত্ব অন্য সংগঠনের উপর সম্পূর্ণ তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের হতাশ হতে হয়েছে। তাই আমাদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টে ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য সরাসরি এবার যুক্ত হব।”
তাহলে কি মনে হচ্ছে? সত্যি কি মামলার গতি ধীর হয়ে যাবে, নাকি এতে লড়াই আরো জোরদার হবে? এখন সেটা সময়ই বলে দেবে।
২২শে এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে শুনানি
আর এই বিতর্কের মধ্যেই আগামী ২২শে এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি হবে বলে জানা যাচ্ছে। সূত্র বলছে, ২৪শে মার্চের শুনানির পর আদালতে নির্দেশ জানানো হয়েছে, ২২শে এপ্রিল মামলাটিকে “হাই আপ অন দ্য বোর্ড” হিসেবেই ধরা হবে।অর্থাৎ, মামলাটিকে সর্বচ্চ গুরুত্ব দিয়েই দেখা হবে।
ডিএ মামলাকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনেরগুলির মধ্যে বিভাজন বর্তমানে মাথাচড়া দিয়ে উঠেছে। কেউ বলছেন নতুন পক্ষে যুক্ত হওয়ায় মামলার গতি ধীর হয়ে যাবে। আবার কেউ বলছেন এটি ন্যায়ের লড়াই। এখন শেষ পর্যন্ত আদালত কি সিদ্ধান্ত নেয়, সেদিকেই সবার নজর। অর্থাৎ, ২২শে এপ্রিলে বোঝা যাবে এই জল কতদূর গড়ায়।