বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভারতকে চাপে ফেলার চেষ্টা? অতীত কৃতজ্ঞতা ভুলে ভারতের শত্রুর আশ্রয় নিল বাংলাদেশ! শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের দীর্ঘ ফাটল স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পড়শি দেশের প্রতি ন্যূনতম কৃতজ্ঞতা তো নেই, বরং ভারতকে চাপে ফেলতে চিনের (China) সাথে হাত মেলালো মহম্মদ ইউনূসের বাংলাদেশ।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
বেশ কয়েকটি সূত্র দাবি করছে, ভারতকে শায়েস্তা করতে এবার বাংলাদেশকে উচ্চশক্তি সম্পন্ন অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে ঢেলে সাজাচ্ছে ড্রাগনের দেশ। জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই চিন থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র এসে পৌঁছেছে ওপার বাংলায়। এক বিশেষ গবেষণা পত্রে এও দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশকে ভারতের সমকক্ষ করে তুলতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন অস্ত্রশস্ত্রের পাশাপাশি বহু সামরিক প্রযুক্তিও ইউনূসের হস্তান্তর করেছে জিনপিংয়ের দেশ।
ভারতকে ফাঁপরে ফেলাই লক্ষ্য, বাংলাদেশকে ঢেলে সাজাচ্ছে চিন?
বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম দাবি করছে, বাংলাদেশ যাতে সামরিক অস্ত্রশস্ত্রের দিক থেকে ভারতকে টেক্কা দিতে পারে সেজন্য ইউনূসের দেশকে যাবতীয় সামরিক সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে চিন। মঙ্গলবার ঢাকায় প্রকাশিত হয়েছে চিনের জাতীয় ভাবমূর্তি শীর্ষক গবেষণা পত্র। আর তাতেই বাংলাদেশকে শক্তিশালী অস্ত্র দিয়ে চিনের সাহায্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
বেশ কয়েকটি সূত্র বলছে, মঙ্গলবার ঢাকার একটি হোটেলে সেন্টার ফর অল্টারনেটিভস কর্তৃক আয়োজিত গবেষণা পত্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্তা থেকে শুরু করে উদ্যোক্তা ও চিনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনও। গবেষণা পত্রটিতে লেখা হয়েছে, জিনপিং সরকার বাংলাদেশি অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি ও বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেডকে রকেট লঞ্চার, হালকা ইউটিলিটি যুদ্ধ যান, শক্তিশালী রাইফেলসহ উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন অস্ত্র হস্তান্তর করেছে। গবেষণা পত্রে বিশেষভাবে উল্লিখিত, 2012 সালে চিনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ নৌসেনার খুলনা শিপইয়ার্ডে লিমিটেডে দেশীয়ভাবে নির্মিত টহল জাহাজও সে দেশের নৌবহরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
রিপোর্টে নয়া তথ্য
সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার পতনের পরও বাংলাদেশ এবং চিনের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কে কোনও রকম পরিবর্তন আসেনি। জানা যায়, এর আগে অক্টোবর নাগাদ লিবারেশন আর্মি শেষ বারের মতো দুটি যুদ্ধ জাহাজকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠিয়েছিল। সূত্র বলছে, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা দখলের পর এটিই ছিল বিদেশি নৌযানের প্রথম সফর।
চিনের সাহায্য চেয়েছেন ইউনূস?
রিপোর্ট মারফত খবর, ভারতকে আটকাতে এবং নিজেদের সামরিক অবস্থান মজবুত করতে নাকি চিনের কাছে সহযোগিতা প্রার্থনা করেছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। জানা যায়, ওপার বাংলার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা চিনের তরফে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও জোরদার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
গবেষণা পত্রটি উল্লেখ করে, গত অক্টোবর মাসে ঢাকায় আয়োজিত এক সেমিনারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন নিশ্চিত করেছিলেন যে, বাংলাদেশ চিনের কাছ থেকে বৃহত্তর সামরিক সহযোগিতা চায়। সামরিক অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সহযোগিতার মাধ্যমেই দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে বলেই দাবি করেছিলেন তিনি।
চিনের সাথে বিরাট চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশের
গবেষণা পত্রটিতে এও দাবি করা হয়েছে যে, 2002 সাল নাগাদ দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা উৎপাদন, সামরিক প্রশিক্ষণ ও উন্নত প্রযুক্তির সহযোগিতা বিষয়ক এক বিশেষ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। রিপোর্ট বলছে, 2014 সালে পৌঁছে তড়িঘড়ি চিনের সাথে সামরিক সহযোগিতা বিষয়ক মোট 4টি বিশেষ চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। জানা যায়, এই চুক্তি অনুযায়ী, চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি বাংলাদেশের সেনাকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সামরিক প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা প্রদান করবে। জানা গিয়েছে, চিনের কাছ থেকে যাবতীয় সামরিক সহযোগিতা নিয়ে দ্বীপাক্ষিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাইছে ইউনূসের দেশ।
অবশ্যই পড়ুন: বাদ রোহিত! ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে নতুন অধিনায়ক পাচ্ছে ভারত? বিরাট তথ্য ফাঁস
ভারতের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?
একদিকে চিনের সাথে হাত মিলিয়ে অর্থনৈতিক করিডোর তৈরি করেছে পাকিস্তান। পশ্চিম দিকের দেশের এহেন পদক্ষেপে কার্যত চাপে পড়েছে ভারত। এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে, চিনকে সামরিক বন্দর তৈরি করতে নাকি 5 হাজার একর জমি দিতে পারে পাকিস্তান। পাকিস্তানের পরই এবার একেবারে ঘরের কাছের দেশের এমন পদক্ষেপ ভারতের চাপ অনেকটাই বাড়িয়েছে।
শোনা যাচ্ছে, ভারত এবং মায়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সম্পর্কের কারণেই সরু রাস্তা দিয়ে ঢুকে পড়েছে চিন। বেশ কয়েকটি রিপোর্ট বলছে, চিনের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় 72 শতাংশ অস্ত্র কিনেছে বাংলাদেশ। গবেষণা পত্রটি উল্লেখ করেছে, 2010 থেকে 2019 দলের মধ্যে শুধুমাত্র চিনা অস্ত্র পেতে 2.59 বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে বাংলাদেশ। এবার সেই তালিকায় আরও একাধিক অস্ত্র জুড়ল। যা ভারতের কপালে চিন্তার ভাজ অনেকটাই বাড়াবে।