২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে আরও একধাপ এগোল কমিশন। আদালতের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন এবার পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাঠিয়েছে শিক্ষা দপ্তরের কাছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে অযোগ্য প্রার্থীদের নাম। এই তালিকা হাতে পাওয়ার পর পরই রাজ্য সরকারের শিক্ষা দপ্তর শুরু করেছে পরবর্তী পদক্ষেপের তোড়জোড়।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই তালিকা?
এই তালিকায় উল্লেখ রয়েছে এমন সমস্ত প্রার্থীর, যাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। আদালত ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে, যেসব প্রার্থীরা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন তাদের নাম চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই নির্দেশ মেনেই এবার কমিশন পাঠাল বিস্তারিত তালিকা।
কতজনের নাম রয়েছে তালিকায়?
যদিও তালিকায় নাম থাকা প্রার্থীদের সংখ্যা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি, তবে সূত্রের খবর অনুযায়ী সংখ্যাটা কয়েকশ’র কাছাকাছি হতে পারে। তালিকা যাচাই করে দেখা হচ্ছে, কারা ঠিক কীভাবে নিয়ম লঙ্ঘন করে চাকরি পেয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ হয়তো মার্কশিটে কারচুপি করেছেন, কেউ আবার শূন্য পদ ছাড়াই চাকরি পেয়ে গিয়েছেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে?
শিক্ষা দপ্তর এই তালিকা হাতে পাওয়ার পর শুরু করেছে প্রাথমিক তদন্ত। খুব শীঘ্রই অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি বাতিল করে দিতে পারে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি, যাদের জায়গায় নতুন নিয়োগ হতে পারে, তারও প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আদালতের নির্দেশ মেনে এই প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে।
যোগ্য প্রার্থীদের কী হবে?
যোগ্য অথচ চাকরি না পাওয়া বহু প্রার্থীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বেআইনি নিয়োগ বাতিল করে প্রকৃত মেধাবীদের সুযোগ দেওয়ার। এই তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে সেই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। যদি চাকরি বাতিল হয়, তবে শূন্যপদে মেধাতালিকা অনুযায়ী নতুন নিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হবে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া কী?
এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলেও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। একদল বলছে, এতে প্রমাণ হচ্ছে সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর। অন্যদিকে বিরোধীরা বলছে, এটা আসলে মানুষের চাপের ফল। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই প্রার্থীরা পথে নেমে প্রতিবাদ করছেন।
২০১৬ সালের এসএসসি প্রাইমারি নিয়োগ কেলেঙ্কারির যে ছায়া দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর পড়েছিল, এবার হয়তো তার থেকে মুক্তির পথ তৈরি হচ্ছে। তালিকা প্রকাশ, তদন্ত এবং চাকরি বাতিলের প্রক্রিয়া সফল হলে, ভবিষ্যতে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও ন্যায্য হবে বলেই আশা করা যায়।