প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: একের পর এক মামলায় মাথা নিচু হচ্ছে রাজ্য সরকারের। যার মধ্যে অন্যতম হল স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা। টানা এক বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টে একের পর এক শুনানি চললেও শেষে গতকাল এই মামলা থামল। কিন্তু মামলার অন্তিম পর্যায় এলেও মামলায় রায় সঙ্গ দিল না রাজ্য সরকারের। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের গোটা প্যানেল বাতিল করে দেয়। আর এই আবহে আরও এক মামলা বাতিল করল কলকাতা হাইকোর্ট।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
ঘটনাটি কী?
২০০৪ সালে সর্বশিক্ষা মিশনের আওতায় শিক্ষামিত্র (Sikha Mitra Workers) নিয়োগ করে রাজ্য। যেখানে এই শিক্ষামিত্রদের মূল কাজ হল, পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়া এবং স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের পুনরায় স্কুলে ফেরানোর জন্য বড় উদ্যোগ নেওয়া। যদি সেই সকল বিনামূল্যে করাত না সরকার। এই কাজের জন্য তাঁদের প্রতি মাসে ২,৪০০ টাকা করে বেতন দেওয়া হত। এরপর ২০১৩ সালে শিক্ষামিত্রদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ঘোষণা করে রাজ্য। এবং ২০১৪ সালে তাঁদের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় রাজ্যের তরফে এও বলা হয় যে, ৬০ বছরের আগেই চাকরি থেকে অবসর নিতে হবে কর্মীদের। যা মানতে পারেনি শিক্ষামিত্ররা। তাই রাজ্যের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা করেন শিক্ষামিত্রদের একাংশ।
মামলায় মুখ পুড়ল আদালতের
সূত্রের খবর, দুই পক্ষের সকল অভিযোগ ভালো করে পর্যবেক্ষণ করার পর ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের বেঞ্চ শিক্ষামিত্রদের যুক্তিকে সমর্থন করেন। এবং রাজ্যের ওই সিদ্ধান্তকে খারিজ করে দেন। এদিকে সেই রায় মানতে নারাজ রাজ্য সরকার। তারা আবার পাল্টা এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে এই মামলার শুনানি হয়। অবশেষে আজ অর্থাৎ শুক্রবার হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে এই মামলা। আর সেই মামলাতেও মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারের।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
জানা গিয়েছে কেন শিক্ষামিত্ররা ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করতে পারবে না সে বিষয়ে দাবি জানিয়েই আবেদন জানালে আজ হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে শিক্ষামিত্রেরাও ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরি করতে পারবেন। এবং আদালতের তরফে রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয় যে শীঘ্রই বকেয়া বেতন মিটিয়ে ওই সব শিক্ষামিত্রদের কাজে পুনরায় ফেরাতে হবে। হাইকোর্টের এই রায় খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শুধু তাই নয়, আজকের এই রায় বাংলার শিক্ষামিত্রদের জন্যেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।