বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: জুলাইতেই চালু হচ্ছে ফরাক্কার নির্মীয়মান চার লেনের নতুন সেতু (Farakka Setu)। বহু প্রতীক্ষার পর অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন শহরবাসী। সম্প্রতি লোকসভার অধিবেশনে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় জাতীয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গডকড়ী আগামী 31 জুলাই গঙ্গার ওপর নির্মীয়মান নতুন সেতুটির উদ্বোধনের কথা ঘোষণা করেছেন। সূত্রের খবর, রাজ্যের এক সংসদের প্রশ্নের জবাবে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা সেতু চালু করার কথা ঘোষণা করেন মন্ত্রী। আর তাতেই খুশির জোয়ার বইছে জেলা জুড়ে।
আমাদের সাথে যুক্ত হন
Join Now
ফরাক্কার নতুন সেতু নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ঘোষণা
সাম্প্রতিক লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন কেন্দ্রীয় রাজ্য সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী গডকড়ীকে মুর্শিদাবাদ জেলার ফরাক্কা ব্রিজ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ওইদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, 2018 সালের 20 ডিসেম্বর পর্যন্ত সেতু তৈরির কাজ 5,468 কিলোমিটার পর্যন্ত হয়েছিল। পরবর্তীতে সেই কাজে ফের হাত লাগায় কেন্দ্র। মন্ত্রী জানান, এখনও পর্যন্ত 83.6 শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
এদিন সেতু নির্মাণের পিছনে খরচ হওয়া অর্থের পরিমাণও প্রকাশ্যে আনেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বিজেপি মন্ত্রী জানান, ফরাক্কায় গঙ্গার ওপর থেকে নির্মীয়মান নতুন সেতুটি তৈরি করতে সরকারের খরচ হয়েছে 521.19 কোটি টাকা। এখনও অনেকটাই কাজ বাকি। তবে সেই কাজ আগামী জুলাইয়ের 31 তারিখের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে। মন্ত্রীর বক্তব্যের পর ফরাক্কার প্রাক্তন বিধায়ক মইনুল হক বলেন, ফরাক্কার চার লেনের এই নতুন সেতু শহরের যানজট থেকে মানুষকে মুক্তি দেবে। সেই সাথে নদী পারাপারের সময় প্রাণহানি থেকে শুরু করে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও অনেকটাই কমবে। 31 জুলাই যদি সেতু তৈরির এই বিরাট কর্মযজ্ঞ শেষ হয় তাহলে তার থেকে বড় খুশির খবর আর কিছুই হতে পারে না।
নতুন সেতু তৈরি হলে উত্তরবঙ্গের সাথে যোগাযোগ সহজ হবে
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পর জঙ্গীপুরের সাংসদ খলিলুর রহমানের গলাতেও শোনা যায় আশাবাদী সুর। তিনি বলেন, 2018 সালে ফরাক্কার দ্বিতীয় সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল 2021 সালের মধ্যে। ফরাক্কার বর্তমান সেতুটি মাত্র 2 লেনের। এদিকে সেতুর দুই দিকে 4 লেনের রাস্তা। ফলত যানজট হওয়াটাই স্বাভাবিক। দুই লেনের সেতুর কারণেই বর্তমানে যান চলাচলের চাপে লকগেট গুলি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ক্ষতি হচ্ছে সেতুটিরও। এরপরই তিনি বলেন, 2016 সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ফরাক্কার ডাউনস্ট্রিমের 500 মিটার দূরে গঙ্গার ওপর 4 লেনের সেতু তৈরির কথা ঘোষণা করার পর ছাড়পত্র দেয়। বর্তমানে সেতুর কাজ শেষ হওয়ার আশ্বাসও মিলেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তরফে। আগামী জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহের মধ্যে এই কাজ শেষ হলে উত্তরবঙ্গের সাথে যোগাযোগ অনেকটাই সহজ হবে বলেই মনে করছেন জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর।
রাজ্যের দীর্ঘতম সেতু চালু হতে চলেছে ফরাক্কায়
দেশের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার 34 নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর যখন 2 লেনের সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল সেই সময়ে যান চলাচলের সংখ্যা ছিল প্রতিদিন প্রায় 3 হাজার। তবে বর্তমানে সেই সংখ্যাটা বেড়ে চার গুণ অর্থাৎ 12 হাজার ছাড়িয়েছে। ফলত দুই লেনের ব্রিজের চারপাশে 4 লেনের রাস্তায় যথেষ্ট যানজট তৈরি হয়। নির্মাণের সময়সীমা বাড়ায় খরচের অঙ্কও বাড়তে থাকে।
অবশ্যই পড়ুন: লন্ডনের মেট্রো স্টেশনের নাম বাংলায়, ব্রিটিশ সাংসদ আপত্তি দেখাতেই মুখ খুললেন মাস্ক
তবে বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যে 4 লেনের সেতু তৈরির কাজ চলছে তার খরচ কয়েক গুণ বেশি হলেও সেটি চওরায় 25 মিটার অর্থাৎ 82 ফুট। একই সাথে সেতুটি লম্বায় 5.468 কিলোমিটার অর্থাৎ 17,980 ফুট। কেন্দ্রীয় সড়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে খবর, এই সেতু নির্মাণ কাজ জুলাইতে শেষ হয়ে গেলে এটিই জলভাগের ওপর নির্মিত পশ্চিমবঙ্গের দীর্ঘতম সেতু হিসেবে পরিচয় পাবে।