প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষিকাদের পোশাক নির্বাচনকে ঘিরে এর আগে একাধিক বিতর্ক (Dress Controversy in School) তৈরি হয়েছিল। যা নিয়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্যে। সেই বিতর্কের সূত্র ধরে কয়েক বছর আগে অসমে শিক্ষিকাদের নির্দিষ্ট পোশাক নির্ধারণ করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, জিন্স, টি-শার্ট, লেগিংস পরে স্কুলে আসা যাবে না। আর এবার সেই পোশাক বিতর্ক উঠে এল বাংলার এক সরকারি বিদ্যালয়ে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
ঘটনাটি কী?
শিক্ষকরাই যে সমাজ এবং সভ্যতার দর্পণ, সেই কথাটা বারংবার ফলে এসেছে বহু যুগ ধরে। কিন্তু এই কথাটা যে তাঁদের পোশাকের জন্য বিতর্ক তৈরি করতে পারে, কেউ ভাবতে পারেনি। ঘটনা সূত্রে জানা গিয়েছে আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশপুর প্রফুল্ল বালিকা বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষিকা মধুরিমা দাস হেনস্থার শিকার হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে শালোয়ার কামিজ পরে তিনি পড়ুয়াদের পড়াতে এসেছেন। তর্কাতর্কির পর্যায় এমন এক জায়গায় পৌঁছয় যে অভিভাবকদের একাংশের উপস্থিতিতে বেশ কিছু শিক্ষিকা তাঁকে চূড়ান্ত হেনস্থা করেন। এমনকি শিক্ষিকাকে মারধর ও মাথার চুল কেটে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই শিক্ষিকা
এই ভয়ংকর ঘটনার ফলস্বরূপ সেই শিক্ষিকা অসুস্থ হয়ে পড়েন।পরে পুলিশ তাঁকে স্কুল থেকে উদ্ধার করে। আসলে সেই শিক্ষিকার বাড়ি থেকে স্কুলের দুরত্ব প্রায় ৬২ কিলোমিটার! নিত্যদিন শাড়ি পড়ে যাতায়াতে সমস্যায় এড়াতে তাই তিনি সালোয়ার কামিজ বেছে নিয়েছিলেন। আর সেই কারণেই প্রায় ১৫ বছর ধরে স্কুল ছাড়া বাঁশদ্রোণী সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। এরপর সেই শিক্ষিকাকে আর স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকি স্কুল কর্তৃপক্ষ তার বেতনও পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়। তবে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় এই বিষয়ে তিনি কোনো বিরোধিতা করতে পারেননি। তবে সুস্থ হতেই এবার এই হেন অবস্থার বিরোধিতা করতে আদালতের দ্বারস্থ হলেন শিক্ষিকা মধুরিমা দাস।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
শিক্ষিকার পক্ষে হাইকোর্টের রায়
যদিও শিক্ষিকা মধুরিমা দাস এই ঘটনা প্রসঙ্গে প্রথমে স্কুলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু অভিযোগ জানানো হলেও এই বিষয়ে তিনি কোনো হস্তক্ষেপ করেননি। তাই বাধ্য হয়ে তিনি এবার হাইকোর্টের পথ ধরেন। এই প্রসঙ্গে শিক্ষিকার আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরীর অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা ফতোয়া জারি করেন, স্কুলে আসতে হলে শাড়ি পরে আসতে হবে। কিন্তু ওই শিক্ষিকা জানিয়ে দেন, তাঁর পক্ষে সেটা সম্ভব নয়। কারণ, তাঁর যাতায়াতের সমস্যা রয়েছে। এদিকে পাঁচ বছর ধরে হাইকোর্টে বিচারাধীন সেই মামলা। অবশেষে ওই মামলা দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এবং বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়র সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে ওই শিক্ষিকাকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।