বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: সিনিয়র সিটিজেনদের ছাড় বাতিল করে কোষাগার ভরাচ্ছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। হ্যাঁ, সম্প্রতি তথ্যের অধিকার আইনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, ভারতের প্রবীণ নাগরিকদের ছাড় প্রত্যাহার করে এখনও পর্যন্ত মোট 8,913 কোটি টাকা আদায় করেছে ভারতীয় রেলওয়ে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
করোনা কালে প্রবীণ যাত্রীদের ছাড় বাতিল করেছিল রেল?
2020 সালের, 20 মার্চ করোনা মহামারীকালে শেষ বারের মতো ভারতের প্রবীণ যাত্রীদের সুবিধার্থে দেওয়া বিশেষ ছাড় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় ভারতীয় রেলওয়ে। সূত্রের খবর, সে বছর ছাড় বাতিলের আগে পর্যন্ত দেশের 60 বছর বয়সী পুরুষরা 40 শতাংশ ও 58 বছরের বেশি বয়সি মহিলারা রেলের টিকিটের ওপর 50 শতাংশ ছাড় পেতেন।
তবে কোভিড মহামারীর কারণে আচমকা এই সুবিধাটি প্রত্যাহার করে নেয় ভারতের রেল মন্ত্রক। এমন পদক্ষেপের পর রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছিলেন, ভারতীয় রেল দেশের প্রত্যেক যাত্রীকে গড়ে 46 শতাংশ ছাড় দেয়। রেলমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরই, RTI বা তথ্যের অধিকার আইনের দৌলতে জানা গিয়েছে, ভারতীয় রেলের হাঁড়ির খবর।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
প্রবীণ নাগরিকদের ছাড় বাতিল করেই লাভের অঙ্ক তুলে নিল রেল
রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট বা তথ্যের অধিকার আইনের অধীনে যাত্রীদের তথ্য এবং তাদের মোট রাজস্বের হিসেব থেকে জানা গিয়েছে, 2020 সালের 20 মার্চ থেকে 28 ফেব্রুয়ারি 2025 সালের মধ্যে দেশের প্রায় 31.35 কোটি প্রবীণ যাত্রী(পুরুষ, মহিলা ও তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি) ভারতীয় রেলের বিভিন্ন ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন। আর ঠিক এই সময়কালে সিনিয়র সিটিজেনদের ছাড় স্থগিত থাকায় কমপক্ষে 8,913 কোটি টাকার অতিরিক্ত অর্থ ঘরে তুলেছে ভারতীয় রেল।
RTI কর্মীর দেওয়া তথ্য
তথ্যের অধিকার বা রাইট টু ইনফরমেশন কর্মী তথা মধ্যপ্রদেশের চন্দ্রশেখর গৌড় জানান, আমি 2020 সালের, 20 মার্চ থেকে RTI আইনের অধীনে রেল মন্ত্রণালয়ের কাছে একাধিক আবেদন পত্র দাখিল করেছি। আমার সর্বশেষ আবেদনটি ছিল চলতি বছরের মার্চে।
শেষ পর্যন্ত যাবতীয় তথ্য বিশ্লেষণের পর জানতে পারি, করোনা মহামারীকালে অর্থাৎ 2020 সালের মার্চ মাস থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট 18.279 কোটি পুরুষ, 13.065 কোটি মহিলা ও 43,536 জন তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি ভারতীয় রেলের বিভিন্ন ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই ভারতের প্রবীণ নাগরিক। আর সেই হিসেবেই মোট 31.35 কোটি মানুষের অতিরিক্ত ব্যয় থেকেই আখের গুছিয়েছে ভারতীয় রেলওয়ে।
অবশ্যই পড়ুন: লটারি কেটে লক্ষ্মীলাভ ৭ রাশির, এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে হবে ধনবর্ষা
এদিন রেলের লাভের হিসেব দেওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় রেলওয়ে তথা কেন্দ্রীয় সরকারের এমন পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন ওই RTI কর্মী। চন্দ্র শেখর গৌর বলেন, ভারতের একজন প্রবীর নাগরিক যিনি সারা বছর ধরে সরকারকে কর দেন, ভারতীয় রেলের কাছে থেকে তিনি কি এইটুকু সুবিধা আশা করতে পারেন না? কীসের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার ভারতকে কল্যাণ রাষ্ট্র দাবি করে?