প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: একই দিনে সুপ্রিম কোর্টে পড়ল এবার দুই গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি। দিনভর তাই শীর্ষ আদালত এর দিকে নজর বাংলার চাকরিপ্রার্থীদের। এবং এই দুটি মামলার মধ্যে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ মামলাটি হল, ২০২২ সালে প্রাথমিক নিয়োগ মামলার শুনানি। এবং দ্বিতীয়টি হল SSC-তে চাকরি বাতিল। তবে দুর্ভাগ্যবশত শেষ পর্যন্ত এবার সুপ্রিম কোর্টে পিছোল প্রাথমিক ২০২২ সালের নিয়োগ মামলার শুনানি। জানা গিয়েছে আগামী ২ সপ্তাহ পর নাকি ফের এই মামলার শুনানি হতে চলেছে।
আমাদের সাথে যুক্ত হন
Join Now
বাতিল হল ২০২২ সালের মামলার শুনানি
সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ সোমবার বিচারপতি পি শ্রী নরসিমা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চে ২০২২ সালের মামলার শুনানি উঠেছিল। জানা গিয়েছে ১১ হাজার ৭৫৮ শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের কথা ছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ৯ হাজার ৫৩৩ পদে নিয়োগ করা হয়েছে। বাকি রয়েছে ২ হাজার ৮০০টি শূন্যপদ। তাই সেক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়া কোন পর্যায়ে রয়েছে তা আদালত জানতে চায়। সেক্ষেত্রে তাই এই রিপোর্ট হলফনামা আকারে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে জানাতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে মামলার আবেদনকারীদের তিনটি শ্রেণিতে পৃথকীকরণ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এখনও ঝুলছে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার মামলা
অন্যদিকে আজই সুপ্রিম কোর্টে SSC র ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি রয়েছে। গতবছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে ২২ এপ্রিল স্কুল সার্ভিস কমিশন বা SSC এর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট এক ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেছিল। যা তোলপাড় করে দিয়েছিল গোটা রাজ্য রাজনীতি। সেই সময় হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করে। আর এই নির্দেশের ফলে চাকরি যায় ২৫,৭৫৩ জনের। চাকরি বাতিলের পাশাপাশি যাঁরা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন বা যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশে রীতিমত মাথায় বাজ পড়ে চাকরিপ্রার্থীদের। তাই হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যেতে বাধ্য হয় রাজ্য সরকার। শুধু রাজ্য সরকার নয় পৃথক ভাবে মামলা করে রাজ্যের শিক্ষা দফতর, SSC এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তার পর সুপ্রিম কোর্টে চাকরিহারাদের কয়েক জনও দফায় দফায় মামলা করেন হাই কোর্টের নির্দেশে। গত বছর ৭ মে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ চাকরি বাতিল মামলায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। এ ক্ষেত্রে তৎকালীন প্রধান বিচারপতির যুক্তি ছিল, যদি যোগ্য এবং অযোগ্য আলাদা করা সম্ভব হয়, তা হলে গোটা প্যানেল বাতিল করা ন্যায্য হবে না। এখন দেখার পালা এই মামলায় কতটা টানাপোড়েনের মীমাংসা হয়।