স্নান, খাওয়া-দাওয়া, ঘুমের মতো বাধ্যতামূলক ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাসে গুরুতর প্রভাব ফেলছে স্মার্টফোন ও সোশ্যাল মিডিয়া। বিশেষ করে এই রোগে আক্রান্ত শিশু এবং কিশোর-কিশোরীরা। বাবা-মায়েরা তো বটেই, এই মহামারী নিয়ে চিন্তিত নীতিনির্ধারকরাও। অনেকের মতে, বিদ্যালয়গুলিতে নিষিদ্ধ করা উচিত স্মার্টফোন জাতীয় ডিজিটাল ডিভাইস। তবে এটা করে আদৌ কি ফল পাওয়া সম্ভব? সম্প্রতি সেই উত্তর খুঁজল ইংল্যান্ডের একটি সমীক্ষা।
ফোন নিষিদ্ধ করলেই পাল্টাবে না অভ্যাস
সমাজে একটা কথা আছে যে, ছোটরা বড়দের দেখেই শেখে। বাচ্চাদের ভাল অভ্যাসের জন্য যেমন বাবা-মায়েরা কৃতিত্ব পান, তেমনই তাদের বদভ্যাসের জন্য আংশিক দায়িত্ব বর্তায় তাদের উপরই। সমীক্ষার মতে, এর আগে ফ্রান্স, তুরস্ক, নরওয়ে, সুইডেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মতো একাধিক দেশ, বিদ্যালয়ে স্মার্টফোন নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। এই করে হয়তো শিক্ষা প্রাঙ্গনে ফোনের বাড়বাড়ন্ত রাশ টানা যেতে পারে, কিন্তু সার্বিক ভাবে কখনোই না।
এটা ১৯৭০-৮০ এর দশক নয়। এখন বাচ্চারা স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের সাথেই জন্ম নিচ্ছে। তাই তাদের থেকে এগুলি সরিয়ে নেওয়া মোটেই কাম্য নয়। বরং এই ডিজিটাল সরঞ্জামগুলি কীভাবে স্বাস্থ্যকর এবং দায়িত্বশীল উপায়ে ব্যবহার করতে হয় তা শেখানো উচিত। বহু বাচ্চার কাছে, শিক্ষা এবং সামাজিকীকরণের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম স্মার্টফোন।
উদাহরণস্বরূপ – সাব-সাহারান আফ্রিকায়, সোশ্যাল মিডিয়া মানুষকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবার সাথে সংযুক্ত করে। আফগানিস্তানে, মহিলাদের অধিকার এবং সুরক্ষা সম্পর্কিত তথ্য জানার জন্য একটি মূল্যবান প্ল্যাটফর্ম ইন্টারনেট। বহু দেশের যুবকরা ইন্টারনেট থেকেই মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা পাচ্ছেন। তাই এটি বন্ধ করলে ভালোর চেয়ে ক্ষতিই বেশি।
তাহলে কী করা উচিত
জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ একটি কাঠামো প্রদান করার পিছনে জোর দিয়েছে। তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে এই কাঠামোকে।
নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা – প্রথমত, শিশুদের ক্ষতিকারক বিষয়বস্তু এবং সাইবার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা উচিত।
ডিজিটাল অ্যাক্সেস – প্রত্যেকটি শিশুর কাছে অনলাইনে শেখার এবং জড়িত থাকার সমান সুযোগ থাকা উচিত।
শিক্ষা ও নির্দেশনা – শিশুদেরকে সড়ক নিরাপত্তা শেখানোর মতোই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করতে শেখানো প্রয়োজন।