হাওড়া স্টেশনে এবার বজ্রআঁটুনি, যাত্রীস্বার্থে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ পূর্ব রেলের

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতাঃ হাওড়া স্টেশন (Howrah Station) ভারতের অন্যতম ব্যস্ততম একটি রেল স্টেশন। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীর আনাগোনা এই স্টেশনে। কিন্তু এত গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনেও নিরাপত্তার বড় ফাঁক থেকে গিয়েছে। হাতেগোনা হয়তো খুব বেশি হলে ২৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে ভারতের বৃহত্তম এই স্টেশনে। এমনকি আনাচে-কানাচে এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে পুলিশের কোন নজরদারি নেই। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই পাচারকারী এবং দুষ্কৃতীরা একের পর এক অপরাধ করে যাচ্ছে।


গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন

Join Now

আসল ঘটনাটি কী?

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা যেন হাওড়া স্টেশনের গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। গত ৫ই মার্চ হাওড়া স্টেশনের ওল্ড কমপ্লেক্স থেকে অপহরণ করা হয়েছিল এক শিশু কন্যাকে। আর সেই শিশুটিকে রাজস্থানে পাচার করার ছক ছিল। তবে সৌভাগ্যবশত জিআরপির তৎপরতায় সে তার মায়ের কোলে ফিরে আসে। এই ঘটনা স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, হাওড়া স্টেশন পুরোপুরি নিরাপদ নয়।

READ MORE:  বাড়বে কর্মসংস্থান, উপকৃত হবে বাংলার ৪ কোটি মানুষ! বাজেটে MSME নিয়ে বিরাট ঘোষণা

লাগানো হবে উন্নতমানের ক্যামেরা

এই ঘটনার পর থেকেই রেল পুলিশ (RPF) এবং রেল সুরক্ষা বাহিনী (GRP) এক জরুরী বৈঠক করেছে। স্টেশনের প্রতিটি প্রবেশ এবং বাহির পথের পাশাপাশি প্লাটফর্ম, ওয়েটিং এরিয়াগুলি খুঁটিয়ে দেখা হয়। আর তাতেই ধরা পড়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হাওড়া স্টেশনে ৫০০-এর বেশি ‘গ্রে এরিয়া’ রয়েছে, যেখানে কোন ক্যামেরার নজরদারি নেই। অর্থাৎ, এই সমস্ত জায়গায় দুষ্কৃতীরা অপরাধমূলক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।


বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে

Join Now

এবার এই সমস্যা সমাধানে বড় সিদ্ধান্ত নিলে প্রশাসন। এবার থেকে স্টেশনের প্রতিটি ‘গ্রে এরিয়া’-তে বসানো হবে উন্নতমানের ৫০০টি নতুন সিসিটিভি ক্যামেরা। এখানেই শেষ নয়, এই সমস্ত ক্যামেরায় থাকবে Facial Recognition System (FRS), যা অপরাধীদের মুখকে সনাক্ত করতে আরো সাহায্য করবে।

READ MORE:  অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরবঙ্গে বন্ধ সমস্ত পেট্রোল পাম্প! বিপাকে বাংলার মানুষ

টহল দেবে সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশ

শুধু ক্যামেরা নয়। এবার থেকে স্টেশনের নিরাপত্তা জোরদার করতে আরো বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। গভীর রাতে এবার প্ল্যাটফর্মে টহল দেবে সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশ। সন্দেহজনক কিছু দেখলেই তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শিশু অপহরণ বা পাচারের মতো ঘটনা আটকাতে এবার বিশেষ নজরদারিও চালানো হবে।

পুলিশের নজর এড়িয়ে অপহরণ!

গত ৫ই মার্চের ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, দুষ্কৃতীরা কতটা কৌশলী। অপহরণকারীনি সাহানারা বেগম প্রথমে শিশুটির মায়ের সঙ্গে আলাপ করে বিশ্বাস অর্জন করে। আর তারপর পরিকল্পনামাফিক লজেন্স দিয়ে শিশুটিকে নিজের কাছে টেনে নেয়। গভীর রাতে যখন বেশিরভাগ পুলিশ সদস্য অন্য কাজে ব্যস্ত, তখন সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই শিশুটিকে নিয়ে উধাও হয় সেই দুষ্কৃতি।

READ MORE:  মাস্কের আদেশ ও ট্রাম্পের সম্মতিতে তোলপাড় বিশ্বের ১০০ দেশ! কী এই USAID?

নিরাপত্তা বাড়লে উপকৃত হবেন যাত্রীরা

নতুন এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর হলে শুধুমাত্র শিশু অপহরণকারী বা পাচারকারীদের নয়, বরং স্টেশনে থাকা চোর, পকেটমার এবং অন্যান্য অপরাধীদের ঠেকানোও সম্ভব হবে। হাওড়া স্টেশনকে আরো নিরাপদ করতে গেলে প্রশাসনের এই তৎপরতা সত্যিই জরুরী।

Scroll to Top