কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের ১৮ মাসের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) পরিশোধের দাবি ক্রমশ জোরাল হচ্ছে। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত তিন কিস্তিতে এই বকেয়া ডিএ পরিশোধে আনুমানিক ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ হতে পারে। তবে, অষ্টম বেতন কমিশন কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনার প্রেক্ষাপটে বকেয়া ডিএ প্রদান নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
কেন বকেয়া ডিএ নিয়ে বিতর্ক?
২০১৬ সালে মোদী সরকার সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করলে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে ২০২০-২০২১ সময়কালের ডিএ স্থগিত রাখা হয়। কর্মচারী সংগঠনগুলির দাবি, এই বকেয়া অর্থ দ্রুত পরিশোধ করা হোক। তবে, নতুন বেতন কমিশন কার্যকর হলে বেতন কাঠামোতে পরিবর্তন আসতে পারে, যা বকেয়া ডিএ পাওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে।
অর্থনৈতিক প্রভাব
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, অষ্টম বেতন কমিশন সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হলে কেন্দ্রীয় কোষাগার থেকে বছরে প্রায় ৩০-৩২ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে। এতে উপকৃত হবেন প্রায় ৫০ লক্ষ কর্মচারী ও ৬৫ লক্ষ পেনশনভোগী। তবে, বকেয়া ডিএ পরিশোধ না হলে কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হতে পারে। সম্প্রতি কর্মচারী সংগঠনগুলি একাধিক বিবৃতির মাধ্যমে দ্রুত বকেয়া পরিশোধের দাবি জানিয়েছে।
সরকারের অবস্থান
একজন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সম্প্রতি জানিয়েছেন যে, বকেয়া ডিএ পরিশোধের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন বেতন কাঠামোতে ডিএর হিসাব পুনর্বিন্যাস হতে পারে, ফলে বকেয়া অর্থ পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এমনকি, ডিএ হার যদি ৩% বাড়ানো হয়, তাহলেও সরকারের অতিরিক্ত ৯-১০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
অষ্টম বেতন কমিশন চালু হলে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের ন্যূনতম বেতন ৫১,০০০ টাকা বা তার বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, বকেয়া ডিএ পরিশোধ না করেই নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করা হলে কর্মচারীদের জন্য এটি দ্বৈত সমস্যার কারণ হতে পারে। সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা নির্ভর করবে অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও কর্মচারীদের স্বার্থ রক্ষার ওপর।
বর্তমান পরিস্থিতি
যদিও কেন্দ্রীয় কর্মচারীরা তাদের বকেয়া পাওয়ার দাবি জানিয়ে চলেছেন, সরকার এখনো এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়নি। ফলে লক্ষাধিক কর্মী ও অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগী সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন।