সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীর চাকরি বাতিল (SSC Case) ঘিরে সরগরম সমগ্র বাংলা। জায়গায় জায়গায় চলছে বিক্ষোভ। রোদ, ঝড়, জল উপেক্ষা করে চাকরি হারা শিক্ষকরা রাস্তায় বসে রয়েছে ন্যায়ের দাবিতে। সংসার কীভাবে চলবে, ব্যাঙ্কের লোন, ইএমআই কীভাবে মিটবে? এই ভেবে ভেবে অস্থির সকলে। এদিকে এসবের মাঝেই স্কুলে স্কুলে বিশেষ বার্তা পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বর্তমান পরিস্থিতিতে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন
Join Now
স্কুলে স্কুলে বার্তা পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী
জানা গিয়েছে, এতদিন সে বিজয়া দশমী হোক কিংবা অন্যান্য উৎসব, মেসেজের মাধ্যমেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাতেন মমতা। তবে এই সময়ে কিছুটা যেন ব্যতিক্রম হল। এবার রাজ্যের সকল স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের হাতেলেখা চিঠি পাঠালেন। আর এই চিঠিতে রয়েছে নববর্ষের শুভেচ্ছা বার্তা।
প্রায় ২৬,০০০ চাকরি বাতিলের রায় ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে যেমন কপাল পুড়েছে হাজার হাজার শিক্ষক, শিক্ষা কর্মীদের, ঠিক তেমনই বিপাকে পড়েছে বহু স্কুল। কীভাবে স্কুলের পঠনপাঠন সম্পন্ন হবে? উঠছে প্রশ্ন। বহু স্কুল এমন রয়েছে যেখানে ১০ জন, ২০ জনেরও বেশি শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে স্কুল চালাতে গিয়ে রীতিমতো চোখে সর্ষ ফুল দেখছেন প্রধান শিক্ষকেরা। এহেন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেলেখা চিঠি পেয়ে কিছুটা হলেও যেন মনোবল বাড়ানোর কাজ করেছে স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের বলে মনে করছে একাংশ।
বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে
Join Now
কী বলছে শিক্ষামহল?
এই প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেছেন, ‘নববর্ষের এই শুভেচ্ছাবার্তা শিক্ষক সমাজের জন্য একেবারেই শুভ নয়। এই সরকার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের কতটা খারাপ চোখে দেখে, তা কসবার ডিআই অফিসের ঘটনায় প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। শিক্ষকের পেটে লাথি মেরেছেন কলকাতা পুলিশের এক জন এবং পুলিশমন্ত্রী হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী সেই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেননি। তাই এমন শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়ে শিক্ষকদের মন ভোলানো যাবে না।’
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ প্রধানশিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্রও বলছেন, ‘এর আগেও আমরা মুখ্যমন্ত্রীর বিজয়া শুভেচ্ছাবার্তা পেয়েছি। তখন পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল। কিন্তু সম্প্রতি বহু শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ার পর এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, ২০০০ ছাত্রছাত্রীর স্কুলে পড়ানোর জন্য ১০-১২ জন শিক্ষক রয়ে গিয়েছেন! এই অবস্থায় স্কুলগুলি ভাল করে চলবে কী ভাবে, তা নিয়ে আমরা চিন্তায়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠিতে আমাদের কী প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত, জানি না। সঙ্গে এটাও বলব, একই সঙ্গে শিক্ষকদের পেটে লাথি এবং শুভেচ্ছাবার্তার বিষয়টিকেও কীভাবে দেখব? তা নিয়েও দ্বিধায় রয়েছি।’